বাংলাদেশ টেস্ট দলের স্পিন আক্রমণের স্তম্ভ তাইজুল ইসলাম মিরপুরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের তৃতীয় দিনে ক্যারিয়ারের বড় মাইলফলক ছুঁয়েছেন। প্রথম সেশনের শেষ দিকে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নিয়ে এবং পরে ম্যাথিউ হাম্প্রিজকে বোল্ড করে আয়ারল্যান্ডের ইনিংস ২৬৫ রানে গুটিয়ে দেন তিনি।
৩৫.৩ ওভারে ৪ উইকেট নিয়ে ৭৬ রান, সঙ্গে ৬টি মেডেন যোগ হয় তার নামের পাশে। এতে ৫৭ টেস্টে তার মোট উইকেট দাঁড়ায় ২৪৬, বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে।
দুই দিনে ছড়িয়ে থাকা সাফল্যে বৃহস্পতিবার হ্যারি টেক্টরকে আউট করার পর শুক্রবার সকালে লরকান টাকার ও স্টিফেন ডোহেনির ৮১ রানের জুটি ভাঙেন তাইজুল। ডোহেনি ৪৬ রানে বোল্ড হওয়ার এক বল পর অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনকেও বোল্ড করে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ পাকাপোক্ত করেন তিনি।
২০১৪ সালে অভিষেকের পর ধীরে ধীরে বাংলাদেশের প্রধান স্পিনার হয়ে ওঠার গল্পটি তাইজুলের। ক্যারিয়ারের শুরুতে ১৫ টেস্টে ২৮ ইনিংসে ৫৪ উইকেট নেন তিনি। ২০১৭ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর নেতৃত্বের ভার আরও বাড়ে। এরপর থেকে ৪২ টেস্টে ৭৩ ইনিংসে ১৯২ উইকেট তার নামে। একই সময়ে মেহেদী হাসান মিরাজের ৪৭ ম্যাচে ১৬৬ ও সাকিবের কম ম্যাচে ৫৮ উইকেট। সাকিব না থাকলে ৩১ টেস্টে ৫২ ইনিংসে তাইজুল একাই ১৫২ উইকেট নিয়েছেন, গড় ২৯.৩৪। তার ক্যারিয়ারে আছে ১৭টি পাঁচ উইকেট, ২টি দশ উইকেট, সেরা বোলিং ৮ উইকেটে ৩৯, ইকনমি ৩.০৫।
নিজেকে নিয়ে ‘আন্ডাররেটেড’ তকমা মানতে নারাজ তাইজুল। দিনের খেলা শেষে তিনি বলেন, প্রথম কথা পারফরম্যান্স। যতক্ষণ খেলি, পারফরম্যান্সই মূল কথা। মিডিয়ায় বারবার এই শব্দটি উচ্চারণ না করাই ভালো। দলের সিনিয়রদের কাছ থেকে শেখাই বড় অনুপ্রেরণা। সাকিব ভাই, মুশফিক ভাই, তামিম ভাই, রিয়াদ ভাইদের অভিজ্ঞতা জুনিয়রদের এগিয়ে দেয়। আমি পারফর্ম করছি বলে নাম আসে, না পারলে আসবে না। ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নিয়ে তিনি মজা করেই বলেন, আল্লাহ দিলে ৭০০ নিতেও রাজি।
বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণে তাইজুল বহুদিন ধরেই নিয়ন্ত্রণ, ধৈর্য ও ধারাবাহিকতার সমার্থক। সাকিবের সঙ্গে একত্রে বা তার অনুপস্থিতিতে আক্রমণ নেতৃত্ব দিয়ে যে স্থিতি তিনি এনে দেন, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুরে সেই প্রভাবই আরেকবার চোখে পড়ল।
