Thursday, June 12, 2025
Homeজাতীয়টাঙ্গাইলে নিরাপত্তা শঙ্কায় ‘তাণ্ডব’ চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী বন্ধ করা হয়েছে

টাঙ্গাইলে নিরাপত্তা শঙ্কায় ‘তাণ্ডব’ চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী বন্ধ করা হয়েছে

মসজিদ-মাদরাসার পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটতে পারে আশঙ্কা করে প্রদর্শনী বন্ধের দাবি

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে ‘তাণ্ডব’ চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন আয়োজকরা। মঙ্গলবার দুপুর থেকে উপজেলার আওলিয়াবাদ এলাকায় জেলা পরিষদের কমিউনিটি সেন্টার কাম মাল্টিপারপাস হলে এই প্রদর্শনী বন্ধ করা হয়।

এর আগে শুক্রবার আসর নামাজের পর পারখী ইউনিয়নের উলামা পরিষদের নেতৃবৃন্দ এক প্রতিবাদ মিছিল করেন। এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে প্রদর্শনী বন্ধের লিখিত আবেদন জমা দেওয়া হয়।

প্রতিবাদী মাওলানা আবদুল্লাহ বলেন, ‘‘এই চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ফলে মসজিদ, মাদরাসা এবং অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটতে পারে। তাছাড়া প্রদর্শনী চলাকালে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের আশঙ্কাও রয়েছে। তাই আমরা প্রতিবাদ ও স্মারকলিপি দিয়েছি।’’

চলচ্চিত্রটির অন্যতম আয়োজক সাজু মেহেদী জানান, এ পর্যন্ত নয় লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের সার্ভিসিং, টিকিট ছাপানো এবং স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের খরচ রয়েছে। প্রদর্শনী চালু রাখতে পারা গেছে মাত্র আড়াই দিন।

‘‘প্রথম দিকে দর্শকদের সাড়া ভালোই ছিল। কিন্তু প্রচারে বাধা দেওয়া হয়েছে। পোস্টার লাগাতে বা মাইকিং করতে দেয়নি,’’ বলেন সাজু মেহেদী।

আয়োজক কামরুজ্জামান সাইফুল বলেন, ‘‘স্থানীয় ধর্মীয় নেতাদের কারণে আমি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এমন ঘটনা আর কারো সঙ্গে ঘটুক, তা চাই না। বাল্লা, পারখী ও বিরবাসিন্দা এলাকার মানুষ না এলেও সখীপুর ও মির্জাপুর থেকে দর্শক এসেছিলেন। সকালে হলের সামনে ব্যানার লাগানোর পর মাত্র দুই মিনিটের মধ্যে সেটি খুলে ফেলা হয়।’’

‘‘বিভিন্ন দিক থেকে হুমকিও পেতে থাকি। নিরাপত্তার অভাবে প্রদর্শনী বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি,’’ যোগ করেন তিনি।

কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাকির হোসেন বলেন, ‘‘আয়োজকেরা আমার কাছে এসেছিলেন, কিন্তু আমি জানিয়েছি, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার আমার নেই।’’

কালিহাতী ইউএনও খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি জানি। জেলা পরিষদ হল ভাড়া দিয়েছিল। অফিসে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আবেদন জমা পড়েছে। তবে আমি বর্তমানে ছুটিতে রয়েছি।’’

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শফিকুল ইসলাম জানান, ‘‘আবেদনের ভিত্তিতে ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হল ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। শর্ত ছিল, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে প্রদর্শনী বন্ধ করতে হবে। পরে কী হয়েছে, সে সম্পর্কে আমি এখনো জানি না।’’

এদিকে স্থানীয় পর্যায়ে এ ঘটনাকে ঘিরে নানা আলোচনা চলছে। অনেকে বলছেন, এই ঘটনার ফলে সংস্কৃতি চর্চার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

RELATED NEWS

Latest News