মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার এক আদেশে জানিয়েছে, স্বাধীন সংস্থার বোর্ড সদস্যদের অপসারণের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত সম্ভবত সংবিধানসম্মত। তবে ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ার জেরোম পাওয়েলকে বরখাস্তের বিষয়ে আদালত সতর্কতা প্রকাশ করেছে।
প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস এপ্রিল মাসে যে অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়েছিলেন, তার ফলে ট্রাম্প কর্তৃক বরখাস্ত হওয়া দুটি শ্রম সংক্রান্ত বোর্ড সদস্যের পদচ্যুতি বহাল থাকে। এরা হলেন গুইন উইলকক্স, যিনি ন্যাশনাল লেবার রিলেশনস বোর্ডে ছিলেন, এবং ক্যাথি হ্যারিস, যিনি মেরিট সিস্টেমস প্রোটেকশন বোর্ডের সদস্য ছিলেন।
আদালতের রায়ে বলা হয়, সংবিধান অনুযায়ী বোর্ড সদস্যদের “কারণ ব্যতিরেকে” অপসারণের ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের রয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। যদিও এটি চূড়ান্ত রায় নয়।
তবে আদালতের তিনজন লিবারেল বিচারপতি এই মতের বিরোধিতা করেন। বিচারপতি এলেনা কাগান লেখেন, “১৯৫০ সালের পর এই প্রথম কোনো প্রেসিডেন্ট প্রকৃত কারণ ছাড়া স্বাধীন কোনো সংস্থার কর্মকর্তা অপসারণের চেষ্টা করছেন।”
গুইন উইলকক্স, যিনি এনএলআরবির ৯০ বছরের ইতিহাসে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী সদস্য, ২০২১ সালে প্রথম বোর্ডে যোগ দেন। পরে ২০২৩ সালে তাকে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে সলিসিটর জেনারেল ডি জন সাওয়ার বলেন, ফেডারেল রিজার্ভের গভর্নরদের অপসারণের বিষয়টি এ মামলার অন্তর্ভুক্ত নয় এবং তা ভিন্নভাবে বিবেচনা করা উচিত।
তবে ট্রাম্প পূর্বে ফেড চেয়ার জেরোম পাওয়েলকে অপসারণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন এবং এপ্রিল মাসে বলেছিলেন, “ওনাকে সরাতে আর দেরি হওয়া উচিত না।” সেই মন্তব্যের পর মার্কেট কিছুটা অস্থিরতা দেখায়। পরে ট্রাম্প জানান, তার আপাতত পাওয়েলকে অপসারণের ইচ্ছা নেই।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই রায় প্রেসিডেন্টের প্রশাসনিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে এবং ভবিষ্যতে স্বাধীন সংস্থাগুলোর কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলতে পারে। তবে চূড়ান্ত রায়ের আগে অনেক দিক বিবেচনার প্রয়োজন থাকবে।
কংগ্রেস নির্ধারিত ‘Humphrey’s Executor’ নামক ১৯৩৫ সালের এক মামলার রায়ে বলা হয়েছিল, প্রেসিডেন্ট স্বাধীন বোর্ড সদস্যদের ‘কারণ ব্যতিরেকে’ বরখাস্ত করতে পারেন না। বর্তমানে সেটির ভবিষ্যৎ নিয়েও আদালতের ভিতরে বিতর্ক চলছে।