Friday, November 7, 2025
Homeআন্তর্জাতিকএল-ফাশার দখলের পর যুদ্ধবিরতিতে রাজি সুদানের আধাসামরিক বাহিনী

এল-ফাশার দখলের পর যুদ্ধবিরতিতে রাজি সুদানের আধাসামরিক বাহিনী

গণকবরের স্যাটেলাইট চিত্র প্রকাশ, তবে সেনাবাহিনী লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে

দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধরত আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) মধ্যস্থতাকারীদের দেওয়া একটি মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে। বৃহস্পতিবার তারা এই ঘোষণা দেয়।

এর আগে আরএসএফ দারফুর অঞ্চলের সেনাবাহিনীর শেষ শক্ত ঘাঁটি এল-ফাশার শহর দখল করে নেয়। এরপর সেখানে ব্যাপক হত্যা, লুটপাট এবং যৌন সহিংসতার অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তারা পার্শ্ববর্তী কর্দোফান অঞ্চলের দিকে মনোযোগ দিয়েছে, যা এখনো সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব—এই চারটি দেশের মধ্যস্থতায় প্রস্তাবটি দেওয়া হয়। এক বিবৃতিতে আরএসএফ বলেছে, “সুদানের জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও স্বার্থের প্রতি সম্মান জানিয়ে র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস চতুষ্টয়ের প্রস্তাবিত মানবিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করছে।”

তবে আরএসএফের এই ঘোষণার বিষয়ে সেনাবাহিনী-সমর্থিত সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। এর আগে দিনের শুরুতে সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, তার বাহিনী “শত্রুকে পরাজিত করার জন্য সংগ্রাম করছে” এবং “খুব শীঘ্রই বিদ্রোহীদের আক্রমণে নিহত ও নির্যাতিতদের প্রতিশোধ নেওয়া হবে।”

এদিকে, ইয়েল গবেষকরা বৃহস্পতিবার নতুন স্যাটেলাইট চিত্র প্রকাশ করেছেন, যেখানে এল-ফাশার শহরে “গণকবর” খননের কার্যকলাপ দেখা গেছে। প্রতিবেদনে একটি মসজিদ এবং প্রাক্তন শিশু হাসপাতালের কাছে দুটি স্থানে গণকবরের মতো গর্তের চিহ্ন শনাক্ত করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও) শহরটি দখলের সময় একটি হাসপাতালে “৪৬০ জনেরও বেশি রোগী এবং চিকিৎসা কর্মীর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড” এর খবর দিয়েছিল।

আরএসএফ তাদের বিবৃতিতে বলেছে, “যুদ্ধের ভয়াবহ মানবিক পরিণতি মোকাবিলা করতে এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা বাড়ানোর” পাশাপাশি “জরুরি মানবিক সহায়তা সরবরাহ নিশ্চিত করার” জন্য এই যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন।

এল-ফাশারের পতনের পর দারফুরের পাঁচটি প্রাদেশিক রাজধানীর সবকটির নিয়ন্ত্রণ আধাসামরিক বাহিনীর হাতে চলে যাওয়ায় সুদান কার্যত পূর্ব-পশ্চিমে বিভক্ত হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার সাবেক উপ-প্রধান ও আরএসএফ কমান্ডার মোহাম্মদ হামদান দাগলোর বাহিনীর মধ্যে চলা এই সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং বিশ্বের বৃহত্তম বাস্তুচ্যুতি ও ক্ষুধা সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

  • বিষয়াদি সম্পর্কে আরও পড়ুন:
  • সুদান

RELATED NEWS

Latest News