২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘ ভাতার কোনো ঘোষণা আসেনি। তবে প্রস্তাব এসেছে বিশেষ প্রণোদনা বাড়ানোর। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেট বক্তৃতায় এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তিনি জানান, ২০১৫ সালের পর থেকে নতুন কোনো বেতন কাঠামো না আসায় সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বাড়ানোর সময় এসেছে।
জানা গেছে, নতুন অর্থবছর থেকে ১০ম গ্রেড থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বর্তমানে প্রাপ্ত ৫ শতাংশের সঙ্গে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ, অর্থাৎ মোট ১৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা পাবেন। অন্যদিকে, প্রথম থেকে নবম গ্রেডের কর্মকর্তারা ১০ শতাংশ হারে প্রণোদনা পাবেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই প্রণোদনা বৃদ্ধির ফলে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা।
এই প্রসঙ্গে সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, মূল্যস্ফীতির চাপে সবাইই ভুগছেন। তবে এমন সময়ে সরকারি কর্মীদের বিশেষ সুবিধা বাড়ালে সেটি মূল্যস্ফীতিকে আরও উসকে দিতে পারে। কারণ এই বাড়তি ব্যয় ব্যক্তি খাতে প্রতিফলিত হবে না, বরং বৈষম্য তৈরি করতে পারে।
বাজেট ডকুমেন্ট অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে অফিসারদের বেতন বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৩৪২ কোটি টাকা এবং কর্মচারীদের বেতন বাবদ ব্যয় হবে ৩০ হাজার ১ কোটি টাকা। অফিসার ও কর্মচারীদের বিভিন্ন ভাতা বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪০ হাজার ৭৭১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এই খাতে মোট বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৮৪ হাজার ১১৪ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ খাতে মোট বরাদ্দ ছিল ৭৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা, যা মূল বাজেটে ছিল ৮১ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। ফলে সামনের বছরের প্রস্তাবিত বরাদ্দ গতবারের তুলনায় প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা বেশি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রণোদনা বৃদ্ধির এই পদক্ষেপ সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য স্বস্তির হলেও সামষ্টিক অর্থনীতিতে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে। মূল্যস্ফীতি, রাজস্ব ঘাটতি এবং বৈষম্যের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন জরুরি বলে মনে করছেন তারা।