ক্লাব বিশ্বকাপ ২০২৫-এ দক্ষিণ আমেরিকার ক্লাবগুলো ইউরোপের আধিপত্যকে প্রবলভাবে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে। এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ক্লাবগুলো ইউরোপীয় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছে।
কোপা লিবার্তাদোরেস জয়ী বোটাফোগো ফ্রান্সের চ্যাম্পিয়ন প্যারিস সেন্ট জার্মেইনকে (পিএসজি) ১-০ গোলে হারিয়েছে পাসাডেনায়। অন্যদিকে, ব্রাজিলের অন্যতম সেরা ক্লাব ফ্ল্যামেঙ্গো পিছিয়ে পড়েও চেলসিকে হারিয়ে দিয়েছে ফিলাডেলফিয়ায়।
তবে শুক্রবার রাতে দক্ষিণ আমেরিকার দলগুলোর অপরাজিত ধারার ইতি ঘটে, যখন বোকা জুনিয়র্স মিয়ামিতে শেষ মুহূর্তে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে পরাজিত হয়।
এই ম্যাচে উপস্থিত আর্জেন্টাইন সমর্থকদের ব্যাপক উপস্থিতি চোখে পড়েছে। বায়ার্নের কোচ ভিনসেন্ট কোম্পানি বলেন, “মনে হচ্ছিল যেন লা বোম্বোনেরা স্টেডিয়ামই চলে এসেছে মিয়ামিতে। ইউরোপের দলগুলোর জন্য প্রতিটি ম্যাচই যেন অ্যাওয়ে ম্যাচ।”
চেলসির বিপক্ষে ফ্ল্যামেঙ্গোর ম্যাচেও প্রায় ৫৪ হাজার দর্শকের মধ্যে অধিকাংশই ফ্ল্যামেঙ্গোর সমর্থক ছিলেন। এর বিপরীতে ইউরোপের সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলকভাবে কম।
দক্ষিণ আমেরিকার ক্লাবগুলো শুধু সমর্থনেই নয়, পারফরম্যান্সেও নজর কাড়ছে। ফ্লুমিনেন্স ড্র করেছে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের সঙ্গে, পালমেইরাস ও বোকাও ইউরোপীয় দলগুলোর বিপক্ষে দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।
ডর্টমুন্ডের কোচ নিকো কোভাচ বলেন, “আমি বিশ্বাস করি বেশিরভাগ দক্ষিণ আমেরিকান দলই পরবর্তী রাউন্ডে যাবে। তারা অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ে ভরা স্কোয়াড নিয়ে এসেছে।”
তবে ইউরোপের ক্লাবগুলো এই প্রতিযোগিতায় তুলনামূলকভাবে ক্লান্ত হয়ে এসেছে। যেমন, পিএসজি মে মাস পর্যন্ত ৬০টির বেশি ম্যাচ খেলেছে, যেখানে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ক্লাবগুলো বছরের শুরুতেই মৌসুম শুরু করেছে। সেই সঙ্গে গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া ইউরোপের খেলোয়াড়দের জন্য বাড়তি চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
ফ্ল্যামেঙ্গোর কোচ ফিলিপে লুইস, যিনি নিজে একসময় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও চেলসিতে খেলেছেন, বলেন, “এই ফলাফল দেখে আমি সত্যিই বিস্মিত, কারণ ইউরোপের ক্লাবগুলো ফুটবলের শীর্ষ পর্যায়ে। কিন্তু এখন দক্ষিণ আমেরিকান দলগুলোর প্রতিযোগিতা করার মানসিকতা ও দক্ষতাই বড় ভূমিকা রাখছে।”
বায়ার্ন কোচ কোম্পানি যোগ করেন, “তারা প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত থাকে, তাদের আবহাওয়া পরিচিত, তাদের খেলার মান ভালো এবং সবচেয়ে বড় কথা, তারা জয়ের জন্য ক্ষুধার্ত।”
আগামী রাউন্ডে দক্ষিণ আমেরিকার শক্তির আসল পরীক্ষা হবে, কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রমাণ মিলছে—শিরোপা লড়াইয়ে তারা ইউরোপের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে।