ঢাকা, ৩০ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদের নামে থাকা গাজীপুরের কাপাসিয়ার একটি সরকারি কলেজের নাম পরিবর্তনে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার ছেলে ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ।
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমার কিছু বলার নাই। কারণ আমার বাবা এবং মা এই দেশ এবং এই দেশের মানুষকে অনেক ভালোবাসতেন। আর তাই এদেশের জন্য অনেক ত্যাগ করেছেন। কিছু পাওয়ার জন্য না। তাই ওনাদের কর্মের স্বীকৃতি এই দেশ যদি কোনদিন না-ও দেয়, ইটস ওকে। বাংলাদেশ ভালো থাকলেই হলো।”
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বুধবার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে দেশের ৩৭টি জেলার ৬৮টি সরকারি কলেজের নাম পরিবর্তনের ঘোষণা দেয়। এর অংশ হিসেবে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় অবস্থিত ‘সরকারি শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ ডিগ্রি কলেজ’-এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘কাপাসিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ’।
এই নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে সোহেল তাজ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে একজন প্রাক্তন ছাত্রের অনুভূতির উদ্ধৃতি দেন, যেখানে লেখা ছিল, “বুঝে যাক আমার নাম, তবু বেঁচে থাকুক বাংলাদেশ – তাজউদ্দিন আহমেদ।” স্ট্যাটাসে ওই ছাত্র লেখেন, “শহীদ বঙ্গতাজ তাজউদ্দিন আহমেদ আমাদের কাপাসিয়ার গর্ব ও অহংকারের নাম। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শহীদ বঙ্গতাজ তাজউদ্দিন আহমেদের নাম বাদ দিয়ে নতুন নামের কারণে কী সুবিধা আমরা পাব?”
তারা আরও প্রশ্ন তুলেছেন, “এই মহানায়কের নাম বাদ দেওয়ার উদ্দেশ্যই বা কী? কর্তৃপক্ষ কি এ বিষয়ে স্পষ্ট কোন ধারণা দিতে পারবে?”
বক্তব্যে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, ৫৪ বছরের ইতিহাসে কাপাসিয়ায় তাজউদ্দিন আহমেদের নাম নিয়ে কোনো রাজনৈতিক বিভেদ বা বিতর্ক ছিল না। বরং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি ভাঙার সময়ে ছাত্রজনতা তাজউদ্দিন আহমেদের চত্বরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছিল।
নাম পরিবর্তন নিয়ে স্থানীয়ভাবে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। অনেকে বলছেন, এটি শুধু একটি নাম নয়, এটি কাপাসিয়ার গৌরব এবং একটি ঐতিহাসিক পরিচয়। এখন দেখার বিষয়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে কিনা।