ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে কনক্রিট বোল্ডার দিয়ে নির্মমভাবে কাঁচামাল ব্যবসায়ী লালচাঁদ ওরফে মো. সোহাগকে হত্যার ঘটনার প্রধান আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
রবিবার (২১ জুলাই) ঢাকার মহানগর হাকিম মো. মাহবুবুর রহমান তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালত সূত্র জানায়, রিমান্ড শেষে মহিনকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা অনুসারে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। মহিন স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি দিতে সম্মত হওয়ায় আদালত তা গ্রহণ করেন।
এর আগে ১০ জুলাই প্রথম দফায় এবং ১৫ জুলাই দ্বিতীয় দফায় মহিনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল।
মামলার তদন্তে মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন তিতন গাজী, মো. আলমগীর, মনির ওরফে লম্বা মনির, তারেক রহমান রবিন, সজিব বেপারি, মো. রাজিব বেপারি, নান্নু কাজী ও রিজওয়ান উদ্দিন ওরফে অভিজিৎ বসু।
তাদের মধ্যে ১৭ জুলাই মনির, আলমগীর ও তিতন এবং ১৯ জুলাই সজিব আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। অপরদিকে, রাজিব রিমান্ড শেষে কারাগারে রয়েছেন।
১২ জুলাই তিতন গাজীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত, এবং ১৩ জুলাই আলমগীর ও মনিরের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
গত ৯ জুলাই দিনদুপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের গেট-৩ এর সামনে সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একাধিক ব্যক্তি তাকে বারবার কনক্রিট বোল্ডার দিয়ে আঘাত করে।
হত্যাকাণ্ডের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
পরদিন নিহত সোহাগের বোন মনজুয়ারা বেগম কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলমান রয়েছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সোহাগ হত্যাকাণ্ডটি আবারো রাজধানীতে প্রকাশ্যে সহিংসতার প্রশ্ন তুলেছে এবং ন্যায়বিচারের দাবি আরও জোরালো হয়েছে।