Friday, July 18, 2025
Homeজাতীয়জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের নবীনবরণে জুলাই সাথীদের পাশে থাকার ঘোষণা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের নবীনবরণে জুলাই সাথীদের পাশে থাকার ঘোষণা

আদর্শগত মতপার্থক্য থাকলেও হুমকির মুখে চুপ থাকবে না শিবির, বললেন সভাপতি জাহিদুল ইসলাম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের মাঠে বৃহস্পতিবার ইসলামী ছাত্র শিবিরের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, আদর্শগত মতপার্থক্য থাকতে পারে, তবে জুলাই আন্দোলনের সাথীদের হুমকির মুখে শিবির চুপ থাকবে না।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “জাতি হিসেবে আমরা এখনো আমাদের আদর্শগত অবস্থান নির্ধারণ করতে পারিনি। সংবিধানে গণতন্ত্রের কথা যেমন বলা হয়েছে, তেমনি সমাজতন্ত্রের কথাও আছে—দুইটি পরস্পরবিরোধী মতবাদ।”

নবাগত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে জাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, “মানবজাতি যা কিছু অর্জন করেছে, তা চূড়ান্ত নয়। প্রতিটি অর্জন নতুন সাফল্যের দরজা খুলে দেয়। আমাদের প্রিয় ক্যাম্পাসে তোমাদের স্বাগতম। জগন্নাথে অনেক সমস্যা আছে—হল সংকট, গ্রন্থাগারের স্বল্পতা—তবুও হতাশ হওয়ার কিছু নেই। সংগ্রামের মধ্য দিয়েই মানুষ বড় হয়।”

তিনি আরও বলেন, “একটি স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হওয়ার দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে খুব কম আছে। এই জগন্নাথেই পড়েছেন শহীদ জহির রায়হান, কবি মতিউর রহমান মল্লিক, শাহ আবদুল হান্নান—রাজনীতিক, কবি, সাহিত্যিক, অর্থনীতিবিদদের এই ঐতিহ্য গর্বের।”

উদ্বোধনী বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, “আমরা ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের ক্লাস দেশের অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে আগে শুরু করেছি। চাই তোমরাও সবার আগে শেষ করো। রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন চাই। ছাত্র সংগঠনগুলো যেন শিবিরের মতো ইতিবাচক উদ্যোগ নেয়।”

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মির্জা গালিব। তিনি বলেন, “জুলাই আন্দোলনে যুবকদের সাহসী ভূমিকা ভুলবার নয়। পরিবর্তনের যে স্পৃহা তরুণদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে, তা সমাজ ও রাষ্ট্রে প্রভাব ফেলবে। কিন্তু এই পরিবর্তন রাতারাতি সম্ভব নয়। প্রথম কাজ হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ফেরানো।”

তিনি আরও বলেন, “ছাত্ররা শুধু রাজনীতি নয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতেও দক্ষ হতে হবে। এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেখানে এক সংগঠনের সদস্য অন্য সংগঠনের প্রোগ্রামে অংশ নিতে পারে। শক্তির রাজনীতি থেকে আমাদের বের হতে হবে।”

অনুষ্ঠানে প্রায় দুই হাজার নবীন শিক্ষার্থীকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো হয় এবং দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়।

শিক্ষাবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এমন আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতিবাচক নেতৃত্ব ও দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে সহায়তা করে। অনুষ্ঠানটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে উপস্থিত বক্তারা শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং আদর্শিক স্বচ্ছতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

RELATED NEWS

Latest News