Friday, November 14, 2025
Homeখেলাধুলাক্রিকেটসিলেটে আবারও শান্তর সেঞ্চুরি, ১১৪ বলে ১০০ করে বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহে তোলেন...

সিলেটে আবারও শান্তর সেঞ্চুরি, ১১৪ বলে ১০০ করে বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহে তোলেন অধিনায়ক

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শান্তের টানা দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম মানেই যেন নাজমুল হোসেন শান্তর জন্য বিশেষ মঞ্চ। এই ভেন্যুতে তাঁর টেস্ট খেলাই দুবার, দুবারই পৌঁছেছেন তিন অঙ্কে। ২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইতিহাস গড়া জয়ের টেস্টে প্রথমবার। এবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আবারও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ১১৪ বলে সেঞ্চুরি করে দলকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে গেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

শান্তর এই ইনিংস তাঁর ক্যারিয়ারের অষ্টম টেস্ট সেঞ্চুরি, অধিনায়ক হিসেবে চতুর্থ। এতে মুশফিকুর রহিমের রেকর্ড ছুঁয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে অধিনায়কত্বে ১ হাজার টেস্ট রান ছোঁয়া চতুর্থ বাংলাদেশি হলেন।

ইনিংসটি ছিল সম্পূর্ণ তাঁর শর্তে। শুরুর দিকে অফস্টাম্পের বাইরে probing লেংথে শান্ত খেলেন সামনে পা বাড়িয়ে, বলের লাইনে ব্যাট নামিয়ে নিখুঁত স্ট্রেট ড্রাইভে। দৈর্ঘ্য ছোট হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যাকফুটে হুকে আর পুলে পাল্টা আক্রমণ। সিদ্ধান্তমূলক ফুটওয়ার্ক, হিসেবি আগ্রাসন আর স্কোরিং জোন নিয়ন্ত্রণ, এই তিনে গড়া তাঁর টেমপ্লেটই দেখা গেল আবার।

২০২৩ সাল থেকে এই রূপান্তর সবচেয়ে বড় গল্পগুলোর একটি। এ সময়ে ৩১ ইনিংসে শান্তের রান ১,২৮০, সেঞ্চুরি ৬, ফিফটি ২। আগের ৪০ ইনিংসে ছিল ১,০০৯ রান, সেঞ্চুরি ২, ফিফটি ৩। ডেটা বলছে এই পর্যায়ে তাঁর ৩৫৯ রান, মোটের ৩২.৩৭ শতাংশ, এসেছে স্ট্রেট ব্যাটে ভি জোনে। অন সাইডে মিডউইকেট থেকে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ারের মাঝে এসেছে যথাক্রমে ২৯২ এবং ২০৩ রান, পুল আর সুইপেই বেশি। অফ সাইডে সংগ্রহ ৪৯৫।

বৃহস্পতিবার ইনিংসের প্রথম বলগুলোর একটিতে ক্রেইগ ইয়াংকে মেরে বইয়ের পাতার মতো স্ট্রেট ড্রাইভে খাতা খুললেন শান্ত। একই বোলারের বিরুদ্ধে আরও দুইবার মিদ অফের পাশ দিয়ে ছেদ কাটালেন। ইয়াং যখন দৈর্ঘ্য ছোট করলেন, শান্ত হুইপ করে মিডউইকেটে। আবার ফুলে ফিরলে ওঠানামায় ড্রাইভেই ভরসা। ইনিংস গড়াতেই ট্রেডমার্ক পুল আর সুইপে অন সাইডে স্কোরিং ত্বরান্বিত করেন তিনি। তাঁর শতকে ৩৩ রান আসে ভি জোনে, ৩৮ মিডউইকেট অঞ্চলে, দুই সিগনেচার স্ট্রোকেই ভিত্তি।

অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের বল সুইপ করে তিন অঙ্কে পৌঁছে ব্যাট আর হেলমেট তুলে trademark উদ্‌যাপন করেন শান্ত। ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ১৭১ রানে দলের বড় সংগ্রহে বড় অবদান রাখেন। দিনের খেলাশেষে জয় বলেন, তিনি সব সময়ই আগ্রাসী ব্যাটিং করেন, সেটাই দলের জন্য টোন সেট করে।

আয়ারল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনার ম্যাথিউ হাম্প্রিজ, যিনি পাঁচ উইকেট নেন, শান্তর ইনিংসের প্রশংসা করে বলেন, তিনি নতুন বল দারুণ খেলেছেন এবং আমাদের ওপর দ্রুত চাপ তৈরি করেছেন।

সিলেটের প্রিয় ভেন্যুতে এটি শান্তর আরেকটি স্টেটমেন্ট। বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে তাঁর কর্তৃত্ব এখন তিন স্ট্রোকে স্পষ্ট, স্ট্রেট ড্রাইভ, পুল আর সুইপ, আর সেগুলোর নিখুঁত প্রয়োগেই গড়া এই সেঞ্চুরি।

RELATED NEWS

Latest News