কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বহেরচরে নারী নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার দুপুরে বুড়িচং উপজেলার কাবিলা বাজার এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
শুক্রবার রাজধানীর র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, ২৮ বছর বয়সী শাহ পরানের কাছ থেকে ভিডিও ছড়াতে ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোনও জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, পূর্বে একটি গ্রাম্য সালিশে বড় ভাই ফজর আলীর কাছ থেকে চড় খাওয়ায় অপমানিত হন শাহ পরান। সেই অপমানের প্রতিশোধ নিতে ২৬ জুন রাতে সংঘবদ্ধভাবে হামলার পরিকল্পনা করেন তিনি। ইমো অ্যাপের মাধ্যমে গ্রামবাসীদের একত্র করেন এবং হামলার সময় ভিডিও ধারণের নির্দেশ দেন।
ঘটনার দিন রাত ১১টা ৩০ মিনিটে ফজর আলী সুদের টাকা আনতে ওই নারীর বাড়িতে যান। প্রায় ২০ মিনিট পর শাহ পরানসহ আরও কয়েকজন — আবুল কালাম, অনিক, আরিফ, সুমন, রমজান ও ৮ থেকে ১০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি — দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে নারীর উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। পরে জোর করে ফজর আলীকেও নির্যাতনে অংশ নিতে বাধ্য করে।
এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীর পরিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মুরাদনগর থানায় মামলা করে।
মামলার পর এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সন্দেহভাজন ধর্ষক ফজর আলীও রয়েছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহ পরান হামলার পরিকল্পনা ও ভিডিও ছড়ানোর দায় স্বীকার করেছেন বলে জানায় র্যাব।
শাহ পরানকে মুরাদনগর থানায় হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে। অপর অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।