জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চল প্রধান সংগঠক সারজিস আলম শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত এক জাতীয় সমাবেশে অভিযোগ করেছেন যে, প্রো-ইন্ডিয়া মুজিববাদী শক্তি আবারও বাংলাদেশে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত এই সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এই দেশে কোনো বিদেশ-সমর্থিত মতাদর্শের স্থান থাকবে না। ভারতীয় আধিপত্যকেও প্রতিরোধ করতে হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘একটি জুলাই অভ্যুত্থান পার হয়ে গেছে, কিন্তু মুজিববাদীদের ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি। গোপালগঞ্জে এখনো তাদের শক্ত ঘাঁটি রয়েছে। শুধু আইনি পথে এই চক্রকে রোধ করা সম্ভব নয়। তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করতে হবে।’’
সারজিস আলম আরও বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু মুজিববাদ রুখতে সবাইকে একসাথে দাঁড়াতে হবে। অতীতের সব অভ্যুত্থানে যারা অংশ নিয়েছেন, তারা যেন আজও ঐক্যবদ্ধ থাকেন।’’
তিনি দাবি করেন, গত বছরের ৫ আগস্ট যে স্বপ্ন দেখা হয়েছিল, তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। ‘‘সহস্রাধিক শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন, কিন্তু সেই ত্যাগের ফসল এখনও হাতে আসেনি।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোনো বেসামরিক সমাজভিত্তিক অন্তর্বর্তী সরকার চাই না। আমরা চাই, এটি যেন প্রকৃত অর্থে অভ্যুত্থান-পরবর্তী একটি রূপান্তরকালীন সরকার হয়।’’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘‘ঘাতক হাসিনার বিচার চাই। সেইসাথে চাই একটি স্বাধীন বিচারব্যবস্থা, যা কোনো দলের নির্দেশে পরিচালিত হবে না।’’
আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর নিরপেক্ষ ভূমিকার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘তারা যেন ক্ষমতাসীনদের হাতিয়ার হয়ে না ওঠে।’’
নতুন সংবিধান প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘এই দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে হলে নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে এবং নির্বাচন হতে হবে গ্রহণযোগ্য।’’
তিনি সতর্ক করে দেন, ‘‘একতার নামে যেন আমরা কারো অন্ধ অনুসারী না হয়ে পড়ি। রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকতে পারে, তবে তা যেন সততা ধ্বংস না করে।’’
সারজিস আলমের এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে, বিশেষত ভারতের ভূমিকাকে ঘিরে তার কড়া বক্তব্য ও নতুন সংবিধানের দাবি অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই ধরনের বক্তব্যের প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বিভিন্ন মহল।