ঢাকা, ২৯ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : ২০২৪ সালে আলোচিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের মধ্যে উঠে আসে গাজী সালাউদ্দিন তানভীরের নাম। জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা, সচিবালয়ে অবাধ প্রবেশ এবং ডিসি নিয়োগ ও পাঠ্যবই ছাপার কাগজে কমিশন বাণিজ্য নিয়ে নানা অভিযোগ উঠতে থাকে তার বিরুদ্ধে। ১১ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, তিনি প্রায় ৪০০ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেনে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠে।
তানভীর অবশ্য এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, “৪০০ কোটি টাকার অভিযোগ কেউ হয়তো স্বপ্নে দেখছে। আমি ডিসি নিয়োগ করে থাকলে আমাকে মহাশক্তিশালী কেউ ভাবতে হবে।”
তবে সমালোচনার পরও থেমে থাকেননি তিনি। জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরপরই বদলাতে থাকে তার উপস্থিতি। ফেসবুক লাইভ, বিভিন্ন অনুষ্ঠান, পোস্টার, দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন—সব কিছুতে দৃশ্যমান হয়ে উঠেন তিনি।
২১ এপ্রিল জাতীয় নাগরিক পার্টি এক বিজ্ঞপ্তিতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তানভীরকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়। যদিও তানভীর এটিকে ‘সিস্টেমেটিক’ সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেন।
গণমাধ্যমে একের পর এক অভিযোগ প্রকাশের পর তা টক অফ দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলে চর্চা ও সমালোচনা। অবশেষে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে এবং ২১ মে তানভীরকে ডেকে দুই ঘণ্টার বেশি সময় জিজ্ঞাসাবাদ করে।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তানভীর জানান, “আমি আশাবাদী, দুদক সঠিকভাবে তদন্ত করবে এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ থেকে আমি মুক্তি পাব।”
তবে অনুসন্ধান চলাকালীন দুদকের আবেদনে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত ২৭ মে তার বিদেশ গমন নিষিদ্ধ ও জাতীয় পরিচয়পত্র ব্লক করার নির্দেশ দেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আখতারুল ইসলাম জানান, অনুসন্ধান কার্যক্রমে সহায়তার জন্য এই আদেশ চাওয়া হয়েছিল।
তানভীরের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। কি হবে তার ভাগ্যে, তা নির্ভর করবে পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধান ও আদালতের রায়ের ওপর।
এ বিষয়ে সালাউদ্দিন তানভীরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও একাধিকবার ফোন করেও সাড়া মেলেনি। পরিস্থিতি এখনো উত্তেজনাপূর্ণ এবং দেশজুড়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে এই মামলা।