Wednesday, July 16, 2025
Homeবিনোদনপটৌদিদের ১৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি নিয়ে নতুন করে বিচার, সাইফ আলী...

পটৌদিদের ১৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি নিয়ে নতুন করে বিচার, সাইফ আলী খানের উত্তরাধিকার প্রশ্নের মুখে

২৫ বছর আগের আদালতের রায় বাতিল, মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের নির্দেশে নতুন করে শুনানি হবে এক বছরের মধ্যে

বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খান ও তার পরিবার ১৫ হাজার কোটি টাকার উত্তরাধিকার সম্পত্তি নিয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছেন। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট তাদের মালিকানা নিশ্চিতকারী ২৫ বছর আগের ট্রায়াল কোর্টের রায় বাতিল করেছে এবং নতুন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দিয়েছে।

এই সম্পত্তি উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিলেন সাইফ, তার মা শর্মিলা ঠাকুর, এবং দুই বোন সোহা ও সাবা আলী খান। এই সম্পত্তির উৎস নবাব হামিদুল্লাহ, যিনি ভোপালের শেষ শাসক ছিলেন।

কী বলেছে হাইকোর্ট

হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় দ্বিবেদীর একক বেঞ্চ জানিয়েছে, ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ট্রায়াল কোর্ট যে রায় দিয়েছিল তা সুপ্রিম কোর্টের একটি বাতিল হওয়া রায়ের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছিল। ফলে ওই রায় আইনত টিকে থাকতে পারে না।

বিচারপতি বলেন, “আমি মনে করি, ট্রায়াল কোর্ট অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনায় না এনে মামলাগুলো খারিজ করেছে। সেই সিদ্ধান্ত বর্তমানে বাতিল করা হচ্ছে।”

তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, “মামলাগুলো পুনরায় বিচারিক আদালতে ফেরত পাঠানো হলো। এবং প্রয়োজন হলে উভয় পক্ষ নতুন করে সাক্ষ্য উপস্থাপন করতে পারবে। বিচার দ্রুত শেষ করতে হবে, এক বছরের মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য চেষ্টা করতে হবে।”

সম্পত্তির ইতিহাস ও বিরোধের শুরু

ভোপালের শেষ নবাব হামিদুল্লাহর তিন কন্যা ছিলেন—আবিদা, সাজিদা ও রাবিয়া। বড় মেয়ে আবিদা পাকিস্তান চলে যাওয়ার পর সাজিদা উত্তরাধিকার হিসেবে পারিবারিক সম্পত্তি পান। সাজিদা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন পতৌদি নবাব ইফতেখার আলী খানের সঙ্গে এবং পরে হন ‘নবাব বেগম অব ভোপাল’। তাদের ছেলে মANSoor আলী খান পতৌদি এই সম্পত্তি উত্তরাধিকারসূত্রে পান এবং পরে তা যায় তার সন্তান সাইফ, সোহা ও সাবা’র কাছে।

এই উত্তরাধিকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নবাব হামিদুল্লাহর অন্য উত্তরাধিকারীরা, বিশেষ করে বেগম সুরাইয়া রাশিদ ও নবাব মেহের তাজ সাজিদা সুলতান। তারা দাবি করেন, মুসলিম পার্সোনাল ল অনুযায়ী সম্পত্তির সঠিক বণ্টন হয়নি এবং আদালতে মামলা করেন।

তাদের অভিযোগ ছিল, সম্পত্তি বিভাজনের সময় পাটৌদি পরিবারের পক্ষপাত করা হয়েছে এবং ২০০০ সালের রায়ে তাদের দাবি খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল অন্যায়ভাবে।

সরকারি সনদ ও প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তি

১৯৬২ সালে ভারত সরকার একটি সনদে সাইফের দাদী সাজিদাকে সম্পত্তির একমাত্র উত্তরাধিকারী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। পাটৌদি পরিবার এই সনদকে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ব্যবহার করে। তবে বাদী পক্ষ এই সনদের বৈধতা নিয়েও আপত্তি জানিয়েছে।

আইনি প্রেক্ষাপট ও আগাম নির্দেশনা

আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে, ১৯৪৯ সালে ভারতভুক্তির সময় নবাবদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি এবং গাদ্দির (রাজসিংহাসন) উত্তরাধিকারের জন্য একটি চুক্তি হয়েছিল। সেই অনুযায়ী সম্পত্তি ব্যক্তিগত মালিকানার বলে বিবেচিত হবে এবং উত্তরাধিকার নির্ধারণ হবে ১৯৪৭ সালের ‘ভোপাল সাকসেশন টু দ্য থ্রোন অ্যাক্ট’ অনুযায়ী।

এই আইনি কাঠামোর মধ্যেই ট্রায়াল কোর্টকে আবারও বিচার করতে হবে এবং নতুন প্রমাণ উপস্থাপনের সুযোগ দেওয়া হবে।

মামলাটি এখন আবার বিচারিক আদালতে শুরু হবে। বলিউড তারকা সাইফ আলী খান ও তার পরিবারকে তাদের বিশাল সম্পত্তি রক্ষার জন্য নতুন করে আইনি লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী এক বছরের মধ্যেই এই মামলার নিষ্পত্তি হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

RELATED NEWS

Latest News