Wednesday, June 25, 2025
Homeআন্তর্জাতিকড্রোন যুদ্ধে রাশিয়ার অগ্রগতি, অভিযোজনে ব্যস্ত কিয়েভের সেনারা

ড্রোন যুদ্ধে রাশিয়ার অগ্রগতি, অভিযোজনে ব্যস্ত কিয়েভের সেনারা

প্রযুক্তিতে পিছিয়ে পড়লেও ইউক্রেন নতুন কৌশলে অভিযোজনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে

পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে যখন তিন ইউক্রেনীয় সেনা ১০০ কিলোমিটার বেগে একটি কোয়াড বাইকে ছুটছিলেন, তাদের মাথার ওপর উড়ছিল একটি হামলাকারী ড্রোন। একজন সেনা শটগান দিয়ে সেই ড্রোন ধ্বংস করেন। ঘটনাটি একটি অনুশীলন হলেও বাস্তব যুদ্ধ পরিস্থিতির প্রতিচ্ছবি।

ইউক্রেন যুদ্ধের তিন বছরে উভয় পক্ষই ড্রোন ব্যবহার করেছে যুদ্ধক্ষেত্র নজরদারি ও আঘাত হানার কাজে। তবে সম্প্রতি ইউক্রেনীয় বাহিনী বলছে, রাশিয়া ড্রোন যুদ্ধে প্রথমবারের মতো একধরনের কৌশলগত সুবিধা অর্জন করেছে। তারা এখন বেশি সংখ্যক, উন্নত ও প্রতিরোধযোগ্য ড্রোন ব্যবহার করছে।

কিয়েভের সামরিক কমান্ডার ও সেনারা বলছেন, রাশিয়ার এই অগ্রগতি ইউক্রেনকে নতুন কৌশলে অভিযোজন করতে বাধ্য করছে। ইউক্রেনের সামরিক প্রধান ওলেক্সান্ডার সিরস্কি বলেন, “ড্রোন প্রযুক্তির উন্নয়ন বাহিনী মোতায়েন ও দুর্গ নির্মাণের কৌশলে পরিবর্তন আনছে।”

ডোনেৎস্ক অঞ্চলের ক্রামাতোরস্ক শহরের কাছে সেনারা গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় জাল বসিয়ে ড্রোনের আঘাত ঠেকানোর চেষ্টা করছে। সাঁজোয়া যান থেকে শুরু করে কোয়াড বাইক পর্যন্ত ঢেকে রাখা হচ্ছে। দ্রুত স্থানান্তরের জন্য এখন ছোট যানই বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে।

২৮ বছর বয়সী সেনা ‘আকাডেমিক’ বলেন, “এই যানগুলো ছোট, চালাতে সহজ এবং যোদ্ধাদের কাছে দ্রুত পৌঁছানো যায়। আহতদের সরাতেও সুবিধা হয়।”

উভয় পক্ষই এখন মোটরবাইক ইউনিট ব্যবহার করছে আক্রমণে। ইউক্রেনীয় এক সেনা বলেন, “আমরা এখন বাইসাইকেল ব্যবহার করতে যাচ্ছি।”

রাশিয়ার এই ইউনিটগুলোকে বলা হচ্ছে ‘সুইসাইড স্কোয়াড’। তারা ফ্রন্টলাইনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ডেকে আনছে। ইউক্রেনের ২৮তম পৃথক যান্ত্রিক ব্রিগেডের প্রেস অফিসার ইয়েভগেন বলেন, “যুদ্ধের দর্শনই বদলে গেছে। ভারী যান নয়, এখন দ্রুত ও মোবাইল বাহিনী প্রয়োজন।”

তিনি আরও জানান, রাশিয়া এখন শুধু অঞ্চল দখলের চেষ্টা করছে না, বরং সরবরাহ লাইনে আঘাত হানার কৌশল নিয়েছে। তাদের লক্ষ্য বছরের শেষের মধ্যে ক্রামাতোরস্ক দখল করা।

ইউক্রেনীয় সেনারা জটিল পরিস্থিতিতে উদ্ভাবনী কৌশলে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে। আকাডেমিক নিজে একটি বেসমেন্টে তৈরি করা ধাতব কাঠামোর বাগি চালান, যাতে জ্যামার যুক্ত রয়েছে। এটি শত্রুর ড্রোন সিগন্যাল বিঘ্নিত করতে সক্ষম।

তিনি বলেন, “আমরা ভালোভাবে প্রতিরোধের চেষ্টা করছি, কিন্তু শত্রুপক্ষও উন্নতি করছে।”

২৭ বছর বয়সী ‘বোরোডা’ ও তার দল একটি কৃষি কাজে ব্যবহৃত ড্রোনকে খাবার ও ওষুধ পরিবহনের কাজে রূপান্তর করেছেন। রেশন সংকটে থাকা সেনাদের কাছে এসব সরবরাহ করেন তারা।

তবে এ ধরনের উদ্ভাবন দীর্ঘমেয়াদে যথেষ্ট হবে না বলে মনে করছেন অনেকেই। রাশিয়ার চেয়ে পিছিয়ে পড়া সামরিক উৎপাদনের ঘাটতি পূরণে ইউক্রেন আরও বিনিয়োগ ও পশ্চিমা সহায়তার ওপর নির্ভর করছে।

বোরোডা বলেন, “যদি আমরা যথেষ্ট সহায়তা পাই, তাহলে আমরা হয়তো কিছুটা সমতায় আসতে পারব।”

RELATED NEWS

Latest News