ফিনল্যান্ড সরকার নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিষিদ্ধ করেছে—এমন একটি দাবি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমার স্ক্যানার নামে একটি বিশ্বস্ত ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা জানিয়েছে, এই দাবি পুরোপুরি মিথ্যা।
একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, যার নাম ‘তামান্না আখতার ইয়েসমান’, সেখান থেকে একটি ছবি পোস্ট করে বলা হয়, ফিনল্যান্ড সরকার ড. ইউনূসকে তাদের দেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। কারণ হিসেবে দাবি করা হয়, তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করেছেন।
পোস্টটিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৪৭ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ফিনল্যান্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে বলা হয়, ফিনল্যান্ডের বর্তমান প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন একজন ব্যক্তি যার নাম বার্থেল ফেরবার।
রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই সব তথ্যই ভিত্তিহীন। প্রথমত, বাংলাদেশ সংবিধানে ৩৪৭ নামক কোনো অনুচ্ছেদই নেই। দ্বিতীয়ত, ফিনল্যান্ডের বর্তমান প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন আলেকজান্ডার স্টাব, কোনো বার্থেল ফেরবার নন।
এছাড়া, যে ছবিটি পোস্টে ব্যবহার করা হয়, তা পুরোনো এবং বিভ্রান্তিকর। এটি মূলত ইউক্রেনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো সেনিক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী রীম আল-হাশিমির একটি বৈঠকের ছবি। রিউমার স্ক্যানার জানিয়েছে, ছবিটি ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল এক্স (পূর্বের টুইটার) অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত হয়েছিল।
গুজবটি শুধু একটি অ্যাকাউন্ট থেকে নয়, পরবর্তীতে আরও বেশ কয়েকটি ফেসবুক পেজ ও প্রোফাইল থেকেও ছড়ানো হয়। এমনকি কেউ কেউ এটিকে সত্য বলে প্রচার করতে থাকেন।
রিউমার স্ক্যানারের তথ্য বিশ্লেষণে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ফিনল্যান্ড সরকার ড. ইউনূসকে নিষিদ্ধ করেনি এবং পোস্টে ব্যবহৃত তথ্য ও ছবি ভুয়া।
এই ধরনের গুজব সামাজিক বিভ্রান্তি তৈরি করে এবং প্রমাণ ছাড়া যেকোনো দাবি বিশ্বাস করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।