Save the Children জানিয়েছে, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রস্থান গত বছরের তুলনায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কক্সবাজারের শিবিরে শিশুদের অবস্থার ক্রমবর্ধমান অবনতি এবং তহবিল কমে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় সেবা সীমিত হওয়ার কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (UNHCR)-এর তথ্যমতে, এই বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রায় ১,০৮৮ রোহিঙ্গা সমুদ্রপথে বাংলাদেশ ছাড়েছে, যাদের মধ্যে প্রায় ৮৭ জন শিশু। একই সময় গত বছর এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৩৬৪।
Save the Children তহবিলদাতাদের কাছে শিক্ষার, জীবিকার এবং শিবিরে নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য তহবিল বৃদ্ধির জরুরি আহ্বান জানিয়েছে। তারা আঞ্চলিক সরকারের কাছে শরণার্থীদের নিরাপদে নামার সুযোগ দেওয়ার এবং সহায়তা ও সুরক্ষা প্রদানের অনুরোধ করেছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং দায়িত্ব ভাগাভাগি প্রয়োজন, যাতে আরও জীবনহানি রোধ করা যায় এবং শিশু ও পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।
বর্ষার শেষের দিকে শিবিরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান অপরাধ এবং কমছে সেবা। অনেক পরিবার ভাবছে, ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রপথে চলে যাওয়ার মাধ্যমে একটি ভালো জীবন খুঁজবে।
কক্সবাজারের এক শিবিরে থাকা ২০ বছর বয়সী রাহিম বলেন, “শিবিরে জীবন দিন দিন কঠিন হচ্ছে। কাজের সুযোগ নেই, পড়াশোনার সুযোগ নেই। আমি বিশ্বাস করি, যদি সমুদ্রপেরিয়ে বিদেশে যাই, পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করতে পারব। অনেক বন্ধু মালয়েশিয়ায় যাওয়ার কথা বলছে। অনেকেই এটিকেই একমাত্র উপায় মনে করছে। আমি একবার ভেবে দেখেছিলাম, কিন্তু শুনে ভয় পেয়েছি যে কেউ ধরা পড়েছে, মার খেয়েছে বা আর ফিরে আসে নি। তবুও এখানে যখন কোনো আশা নেই, তখন যাওয়ার স্বপ্ন দেখা কঠিন না।”
Save the Children-এর চাইল্ড পাভার্টি প্রজেক্টের সিনিয়র অফিসার আবেদা সুলতানা বলেন, “শিবিরে সীমিত জীবিকার সুযোগ এবং growing insecurity অনেক রোহিঙ্গা যুবককে ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসনের পথে ঠেলে দেয়। আর্থিক চাপ এবং পরিবারের সহায়তার প্রয়োজনও তাদের এই ঝুঁকিপূর্ণ পথ নেওয়ার কারণ। যারা সফলভাবে অভিবাসন করেছে তাদের গল্প শোনার পর আরও অনেকে একই পথে যেতে উৎসাহিত হয়।”
২০২৫ সালে এই শরণার্থীদের সমুদ্রপথে প্রস্থান নতুন মাত্রা পেয়েছে, যা শিশুদের নিরাপত্তা এবং শিবিরের অবস্থা সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ তৈরি করছে।