Saturday, July 12, 2025
Homeজাতীয়ঢাকায় চাল, সবজি ও মুরগির দাম বাড়তি, ঈদের পরেও স্বস্তি নেই বাজারে

ঢাকায় চাল, সবজি ও মুরগির দাম বাড়তি, ঈদের পরেও স্বস্তি নেই বাজারে

নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দামে ভোক্তাদের কষ্ট, চাষিদের নয় বরং মুনাফা পাচ্ছে করপোরেট গোষ্ঠী

ঈদুল আজহার পর ঢাকার বাজারে চাল, সবজি ও মুরগির দাম স্থির থাকলেও তা এখনো পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি। ফলে ভোক্তাদের ওপর নিত্যপণ্যের খরচের চাপ বাড়ছে।

গত সপ্তাহে পাইকারি পর্যায়ে চালের দাম প্রতি কেজিতে ৪ থেকে ৮ টাকা বাড়ার পর এবার তা খুচরা বাজারে স্থায়ী হয়েছে। একইসঙ্গে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

রাজধানীর শাহজাদপুর, নতুনবাজার, বাড্ডা ও রামপুরা এলাকায় আজ ২৭ জুন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বরবটি, কাঁকরোল ও করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে। পেঁপে, পটোল, শসা ও ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। ঝিঙ্গা ও চিচিঙ্গার দাম ৬০ থেকে ৮০ টাকা।

শাহজাদপুরের ভ্রাম্যমাণ সবজি বিক্রেতা তাইজুল ইসলাম বলেন, “পাইকারি বাজারেই দাম বেশি। গত সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম ১০–২০ টাকা বেড়েছে। বৃষ্টির কারণে সময়মতো সবজি তুলতে পারছে না কৃষকরা, অনেক সবজি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই দাম বাড়ছে।”

চালের দামে এক লাফে বড় বৃদ্ধি দেখা গেছে। মিনিকেট চাল এখন খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৮০–৮২ টাকা কেজি, যা ঈদের আগে ছিল ৭২–৭৪ টাকা। মজাম্মেল মিনিকেটের দাম ৭৫ টাকা থেকে বেড়ে ৮৮–৯০ টাকা কেজিতে পৌঁছেছে।

মাঝারি মানের ব্রি-২৮, ব্রি-২৯ ও পাজাম চালের দাম ৪ টাকা করে বেড়ে ৬০–৬৪ টাকা কেজি হয়েছে। মোটা চাল ‘স্বরনা’র দাম বেড়ে এখন ৫৭–৫৮ টাকা।

কৃষি খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই দাম বৃদ্ধির পেছনে কৃষকদের লাভ নেই। বরং করপোরেট ও চালকল মালিকদের হাতেই বাজারের নিয়ন্ত্রণ।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, “করপোরেট গোষ্ঠী এখন চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা মৌসুমের শুরুতেই কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে নেয়, পরে দাম বাড়িয়ে চাল বিক্রি করে। প্রতিদিন দেশের চালের চাহিদা প্রায় ১ লাখ টন। প্রতি কেজিতে যদি ২ টাকা করে বাড়ায়, তাহলে হিসেব করলেই বোঝা যায় কত টাকা সাধারণ মানুষের পকেট থেকে যাচ্ছে।”

ঢাকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও মিল মালিকরা মৌসুমের মধ্যেই কম দামে ধান কিনে মজুত করেছেন। এখন নানা অজুহাতে তারা দাম বাড়াচ্ছেন।

চাল ও সবজির পাশাপাশি মুরগির দামেও ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। ঈদের পরে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছিল ১৫০–১৬০ টাকায়, বর্তমানে তা বেড়ে ১৬০–১৭০ টাকা হয়েছে। সোনালি মুরগির দাম প্রতি কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে এখন ৩০০–৩২০ টাকা।

বাজারে আসা ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, খাদ্যপণ্যের লাগাতার মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা চাপে পড়েছে। আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও কঠিন হতে পারে যদি বাজার মনিটরিং কার্যকর না হয়।

RELATED NEWS

Latest News