Tuesday, November 4, 2025
Homeজাতীয়আবরার ফাহাদ স্মরণে আলোচনা সভা: জাতীয় সার্বভৌমত্বে ঐক্যের আহ্বান

আবরার ফাহাদ স্মরণে আলোচনা সভা: জাতীয় সার্বভৌমত্বে ঐক্যের আহ্বান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তারা বললেন, আবরার এখন প্রতিরোধ ও স্বাধীনতার প্রতীক

বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার ছয় বছর পরও তার স্মৃতি ও আদর্শ নতুন প্রজন্মের মধ্যে জাগ্রত আছে বলে মন্তব্য করেছেন লেখক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলেন, আবরার শুধু একজন ব্যক্তি নন, তিনি এখন জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতীক এবং বিদেশি আগ্রাসন ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এক অনুপ্রেরণার প্রতীক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) মঙ্গলবার আরসি মজুমদার অডিটরিয়ামে “ভারতীয় আধিপত্য ও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব: শহীদ আবরার ফাহাদকে স্মরণ” শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে।

বক্তারা বলেন, আবরারের আত্মত্যাগ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তরুণ প্রজন্ম এখন দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আরও সচেতন।

আবরারের বাবা মো. বরকত উল্লাহ বলেন, “আমার ছেলের ফেসবুক পোস্ট ছিল দেশের পক্ষে, মাটির পক্ষে, মানুষের পক্ষে। কিন্তু সেই পোস্টের জন্যই তাকে হত্যা করা হয়েছিল। আমার একটাই চাওয়া— ভবিষ্যতের বাংলাদেশে যেন আর কোনো সন্তানকে এভাবে নির্যাতনের শিকার হতে না হয়।”

তিনি আরও বলেন, “যদি কাউকে গুলি করা হয়, সে দ্রুত মারা যায়, কষ্ট কম হয়। কিন্তু সারারাত পিটিয়ে হত্যা করা— এমন নিষ্ঠুরতা আর যেন না ঘটে।”

আবরারের ভাই আবরার ফয়েজ বলেন, “ছয় বছর কেটে গেছে, তবু আমরা বিচার পাইনি। আমার ভাই কোনো দলের ছিল না। ছয় বছর কি যথেষ্ট নয় একটি হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন করার জন্য?”

সভাপতির বক্তব্যে ডাকসু সহসভাপতি আবু শাদিক কায়েম বলেন, “শহীদ আবরার তরুণ প্রজন্মকে নতুনভাবে জাগিয়ে তুলেছেন। তাঁর প্রতিবাদ থেকেই আমরা শিখেছি কীভাবে আগ্রাসন ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হয়।”

তিনি বলেন, “আবরারের শাহাদতের মধ্য দিয়েই নতুন এক প্রজন্মের সূচনা হয়েছিল, যা পরে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও জুলাই বিপ্লবের মতো ঐতিহাসিক ঘটনার ভিত্তি তৈরি করে।”

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি বলেন, “আমরা শুধু আবরারকে স্মরণ করব না, বরং তাঁর দেখানো পথেই এগিয়ে যাব। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অসংখ্য আবরারের প্রয়োজন।”

লেখক রেজাউল করিম রনি বলেন, “বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির দুর্বলতা এসেছে ভূরাজনৈতিক নির্ভরতার কারণে। ভারতকেন্দ্রিক নীতি আমাদের স্বাধীন সিদ্ধান্তগ্রহণে প্রভাব ফেলছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বন্ধুত্ব নয়, স্বার্থই আসল সম্পর্ক নির্ধারণ করে।”

যুক্ত জনগণের বাংলাদেশ সংগঠনের প্রধান সংগঠক রাফে সালমান রিফাত বলেন, “আবরার ফাহাদ ছিলেন এক মহান প্রতীক, যিনি আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়ে শহীদ হয়েছেন।”

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আবরারের বাবা মো. বরকত উল্লাহ। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মনারাত আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুর রব, ‘আমার দেশ’-এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম।

RELATED NEWS

Latest News