ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সামাজিক সমস্যা মোকাবেলায় জুমার খুতবায় আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. এএফএম খালিদ হোসেন। শুক্রবার খুলনা শহরের নূর নগরে নবনির্মিত খুলনা সিটি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
একই অনুষ্ঠানে বিভাগীয় ইমাম সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হয়, যার প্রতিপাদ্য ছিল— “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা এবং সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদক, যৌতুক ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে ইমাম ও আলেম সমাজের ভূমিকা”।
উপদেষ্টা জানান, দেশের ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের মধ্যে ৩৫০টির নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে এবং বাকিগুলোর কাজ চলমান। এসব মসজিদ সমাজে সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, “নামাজ মানুষকে অশ্লীলতা ও অশুভ কাজ থেকে বিরত রাখে, যা সমাজে অপরাধ কমাতে সহায়ক। মসজিদের সংখ্যা বাড়লে উপাসনাকারীর সংখ্যাও বাড়বে এবং সমাজে নৈতিকতা বৃদ্ধি পাবে।”
চাকরি নিরাপত্তা ও মাসিক বেতনের বিষয়ে তিনি জানান, শিগগিরই গেজেটে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে মসজিদ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা। এতে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের মাসিক বেতন ও চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। গত বছর সরকার মসজিদ সংশ্লিষ্টদের জন্য প্রায় ৪ কোটি টাকা সহায়তা প্রদান করেছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, কারাগারে কোরআন-হাদীস শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে আলেমদের সহায়তায় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। শিশুদের জন্য মসজিদভিত্তিক শিক্ষাও শুরু হয়েছে এবং এর সঠিক বাস্তবায়নে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন খুলনা বিভাগের পরিচালক মো. আসিনুজ্জামান সিকদার, যিনি স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে জাকাত ফান্ড থেকে ১৪ জন অসচ্ছল ব্যক্তির মধ্যে ১ লাখ ১৪ হাজার টাকার চেক বিতরণ করা হয়।
প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত চারতলা বিশিষ্ট খুলনা সিটি মডেল মসজিদে রয়েছে পুরুষ, নারী, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক অজু ও নামাজের স্থান, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, হজ রেজিস্ট্রেশন সেবা, ইসলামিক গবেষণা কেন্দ্র, অটিজম কর্নার, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, ইমাম-মুয়াজ্জিনের থাকার জায়গা, সম্মেলন কক্ষ ও গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা।
এই মসজিদ সামাজিক উন্নয়নে একটি কার্যকর মডেল হিসেবে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।