আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ডিসি, এসপি, ইউএনও এবং ওসি’দের র্যান্ডম পদ্ধতিতে বদলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রধান উপদেষ্টা শফিকুল আলম এ তথ্য জানিয়ে বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বুধবার রাজধানীর স্টেট গেস্ট হাউজ যমুনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরে সন্ধ্যায় এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্বে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতেই এ ধরনের বদলির সিদ্ধান্ত।
ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, এই রদবদলের জন্য লটারির মতো একটি নম্বরভিত্তিক পদ্ধতির প্রস্তাব এসেছে। তিনি বলেন, “এতে করে কেউ যেন প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতেই প্রধান উপদেষ্টা এ পদ্ধতির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন।”
বৈঠকে আরও জানানো হয়, নির্বাচনী দায়িত্বে থাকবেন ৮ লাখ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। এদের মধ্যে আনসার সদস্য ৫ লাখ ৭০ হাজার, পুলিশ সদস্য ১ লাখ ৪১ হাজার। তাদের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচনের দিন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশ সদস্যদের বডি ক্যামেরা পরিধান এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে সিসিটিভি স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রায় ৪৭ হাজার ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৬ হাজারকে ‘ভালনারেবল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বৈঠকে সীমান্ত এলাকায়, সারাদেশে এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের কৌশল নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সম্ভাব্য স্ট্রাইক ফোর্স হিসেবে বিজিবি ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়।
এছাড়া, নির্বাচনী সময়ে মোতায়েন করা বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ না থাকায় এবার তাদের জন্য পূর্বপ্রস্তুতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, তিনটি আগের নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ থাকায় তরুণ ভোটারদের জন্য আলাদা ভোটার তালিকা এবং বুথের প্রস্তাবনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। ১৮ থেকে ৩৩ বছর বয়সীদের জন্য আলাদা বুথের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
পূর্ববর্তী নির্বাচনগুলোতে সাধারণত চার দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকত। এবার এ সময়সীমা সাত দিনে বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে যাতে নির্বাচনের আগে-পরে কোনো বিশৃঙ্খলা রোধ করা যায়।
সার্বিকভাবে, আসন্ন নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক এবং নিরাপত্তা প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ ধরনের র্যাডিক্যাল পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সরকার বলছে, ভোটারদের আস্থা ফেরাতেই এই উদ্যোগ।