রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর অনলাইন নকশা অনুমোদন পদ্ধতিতে জালিয়াতির মাধ্যমে বিতর্কিত তিনটি ভবনের নকশা অনুমোদনের ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে। নিরাপত্তা সুরক্ষিত একটি সিস্টেম থেকে মাত্র ১৭ মিনিটে এই অনুমোদন নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর মঙ্গলবার দুপুর থেকে রাজউক তাদের অনলাইন নকশা অনুমোদন কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে স্থগিত করেছে। পাশাপাশি পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রাজউক সূত্রে জানা যায়, ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল পারমিট সিস্টেম (ইসিপিএস) নামের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সাধারণত সব নকশা অনুমোদন করা হয়। কিন্তু ওইদিন মাত্র ১৭ মিনিটে বসুন্ধরা, উত্তরা ও মিরপুরের সাগুফতা হাউজিং এলাকায় তিনটি বিতর্কিত ভবনের নকশা অনুমোদন করা হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নিয়ম অনুযায়ী এই ধরনের বহুতল ভবনের নকশা অনুমোদনের জন্য বিসি কমিটির সুপারিশসহ একাধিক ধাপে যাচাইয়ের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এসব ধাপ উপেক্ষা করেই অননুমোদিতভাবে নকশা অনুমোদন দেখানো হয়েছে।
রাজউকের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “নিরাপদ সাইটে কারা প্রবেশ করেছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে অনুমোদন প্রক্রিয়ায় যেসব কর্মকর্তা প্রবেশাধিকার রাখেন, তাদের মধ্যে কেউ হয়তো এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।”
তিনি জানান, “তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাজউকের সদস্য (পরিকল্পনা) শেখ মতিয়ার রহমান। তারা আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন। দোষীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে এবং বিতর্কিত নকশাগুলো বাতিল করা হবে।”
আইটি শাখার যোগসাজশে এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, উচ্চ নিরাপত্তা সিস্টেম ভেদ করে শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিরাই এমন কার্যক্রম চালাতে পারে।
ঘটনার পর থেকে রাজউকের ডিজিটাল অনুমোদন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় স্থাপনা নির্মাণে আগ্রহী অনেক ভুক্তভোগী অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থার মাধ্যমে ভবিষ্যতে এমন জালিয়াতি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ চায় সংশ্লিষ্ট মহল।