চীন-ভারতের দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ নিরসনে স্থায়ী সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। বৃহস্পতিবার চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডং জুনের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি এই আহ্বান জানান।
চীনের কিংদাও শহরে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকের ফাঁকে এই দুই নেতার মধ্যে বৈঠক হয়। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনাথ সিং দ্বিপাক্ষিক সমস্যাগুলো একটি গঠনমূলক রোডম্যাপের মাধ্যমে সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং স্থায়ী চিহ্নিতকরণের জন্য পূর্বের প্রক্রিয়াগুলোর পুনরুজ্জীবনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন রাজনাথ।
ভারতের তরফ থেকে সাধারণত “দ্রুত সমাধান” শব্দ ব্যবহার করা হলেও এবার “স্থায়ী সমাধান” শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
বৈঠকের পর চীনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়া হয়নি। তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও ভারতের বিবৃতি নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ চীন ও ভারতের মধ্যে ৩ হাজার ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সীমান্ত রয়েছে, যার বড় অংশই অচিহ্নিত এবং বিরোধপূর্ণ। ২০২০ সালে লাদাখে সংঘর্ষে উভয় দেশের সৈন্য নিহত হলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়।
পরবর্তী চার বছর উভয় দেশ বিপুলসংখ্যক সেনা মোতায়েন রাখে হিমালয়ের দুর্গম সীমান্ত এলাকায়। শেষ পর্যন্ত ২০২৩ সালের অক্টোবরে একটি চুক্তির মাধ্যমে সেনা সরানো নিয়ে সমঝোতা হয়।
বৈঠকে রাজনাথ সিং ২০২০ সালের ঘটনার কারণে সৃষ্ট আস্থার ঘাটতি দূর করার ওপরও গুরুত্ব দেন। উভয় দেশ পরবর্তী সময়ে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, সরে আসা, উত্তেজনা হ্রাস এবং সীমান্ত চিহ্নিতকরণ নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে।
সম্প্রতি দিল্লি ও বেইজিং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছে এবং সরাসরি বিমান চলাচল পুনরায় চালুরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য, এসসিও একটি ১০ জাতির ইউরেশীয় নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক জোট। এর সদস্যদের মধ্যে রয়েছে চীন, ভারত, রাশিয়া, পাকিস্তান এবং ইরান। এবারের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে।
তবে, ভারতের দাবি, সন্ত্রাসবাদ বিষয়ক শব্দচয়ন নিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছাতে না পারায় এসসিও প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের যৌথ বিবৃতি প্রকাশ সম্ভব হয়নি।