বৃষ্টির দিন মানেই যেন এক ধরনের অলসতা, আরাম ও ঘরে কাটানোর এক আলাদা আমেজ। এমন আবহে অনেকেই বলেন, বৃষ্টির শব্দ শুনলেই ঘুম পায়। কেউ কেউ কাজের ফাঁকে হাই তুলতে শুরু করেন, কেউ বা অনায়াসেই বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।
এই প্রবণতা কেবল অনুভবের বিষয় নয়, বরং এর পেছনে রয়েছে বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক ও পরিবেশগত কারণ।
বৃষ্টির শব্দ ও হোয়াইট নয়েজ
বৃষ্টির টুপটাপ শব্দকে বিজ্ঞানীরা বলেন ‘হোয়াইট নয়েজ’। এটি একটি মৃদু, নিরবচ্ছিন্ন শব্দ যা মস্তিষ্ককে প্রশান্ত করে এবং আশেপাশের বিরক্তিকর শব্দ ঢেকে দেয়। ফলে মন শান্ত হয় এবং ঘুমের প্রবণতা বাড়ে।
আলো কম থাকায় মেলাটোনিন হরমোন বেড়ে যায়
বৃষ্টির দিনে সূর্যের আলো থাকে কম। এই অন্ধকার বা মেঘলা পরিবেশ শরীরে মেলাটোনিন নামক ঘুমের হরমোনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। তাই শরীর ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে আসে এবং ঘুমের ভাব দেখা দেয়।
তাপমাত্রা হ্রাস এবং ‘রেস্ট মোড’
বৃষ্টির সময় আবহাওয়া ঠান্ডা হয়ে যায়। শরীরের নিজস্ব তাপমাত্রা কমলে মস্তিষ্ক ঘুমের সংকেত পাঠায়। ঠান্ডা পরিবেশে ঘুম আরও আরামদায়ক হয় বলেই, বৃষ্টির দিনে ঘুম বেশি পায়।
মনস্তাত্ত্বিক প্রশান্তি ও অলসতা
বৃষ্টি হলে অনেকেই ঘরের বাইরে কম বের হন, কাজ কমে যায়। এতে অলসতা বাড়ে এবং মানসিক প্রশান্তিও আসে। মন ও শরীর দুটোই বিশ্রামের দিকে ঝুঁকে পড়ে।
সমস্ত উপাদানের সম্মিলন
বৃষ্টির দিনে ঠান্ডা আবহাওয়া, নরম আলো, শান্ত শব্দ এবং কম চাপের পরিবেশ মিলিয়ে ঘুমের জন্য আদর্শ পরিস্থিতি তৈরি হয়। এজন্যই এমন দিনে হাই ওঠা বা হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়া অস্বাভাবিক নয়।
বৃষ্টি মানেই শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়, বরং এটি শরীর ও মনের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। তাই ঘুম পেলে তা উপভোগ করাই ভালো, কারণ সেটি শরীরের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া।