যুক্তরাষ্ট্রের ইরানে সাম্প্রতিক হামলার পর পাল্টা প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় কাতার সরকার সোমবার দেশটির আকাশপথ সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “আঞ্চলিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আকাশপথে চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে।”
গালফ অঞ্চলে অবস্থিত গ্যাসসমৃদ্ধ কাতার থেকে মাত্র ১৯০ কিলোমিটার উত্তরে ইরান। কাতারেই অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি, আল উদেইদ এয়ারবেস।
এই প্রেক্ষাপটে কাতারে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। একই ধরনের সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাজ্য ও কানাডাও।
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, “নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা মার্কিন নাগরিকদের ঘরে থাকার এবং বাহিরে অপ্রয়োজনীয় চলাফেরা পরিহারের আহ্বান জানাচ্ছি।”
এর আগে ইরান জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে হামলার জবাবে তারা ‘গুরুতর ও অনির্দেশ্য প্রতিক্রিয়ার’ প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রবিবার থেকে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করছে।
এদিকে বাহরাইন, যা কাতারের নিকটবর্তী এবং যেখানে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম নৌবহর, সেখানে ইতোমধ্যে বেশিরভাগ সরকারি কর্মচারীকে বাসা থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাহরাইনের মার্কিন দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে দূতাবাসের কিছু কর্মীকে আংশিকভাবে দূর থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি জানিয়েছেন, বিদেশি দূতাবাসগুলোর সতর্কতাগুলো সবসময় নির্দিষ্ট বা বিশ্বাসযোগ্য হুমকির ভিত্তিতে নয়।
তিনি বলেন, “আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, কাতারে নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। কাতার চলমান উত্তেজনা হ্রাসে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”
এর আগে ইসরায়েলের ইরান আক্রমণের পর বিশ্বব্যাপী মার্কিন নাগরিকদের জন্য বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর।
কাতারে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ সীমিত রাখতে বলা হয়েছে, যা আঞ্চলিক উত্তেজনার গভীরতা স্পষ্ট করে তুলেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা পুরো মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে নতুন করে অস্থির করে তুলছে।