পাকিস্তানের পাঞ্জাব সরকার সাম্প্রতিক সহিংস বিক্ষোভের পর এক “চরমপন্থী দল” নিষিদ্ধের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার লাহোরে মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বৈঠক শেষে প্রাদেশিক সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যারা সহিংসতা উসকে দিয়েছে, ঘৃণা ছড়িয়েছে বা আইন ভঙ্গ করেছে, তাদের “অবিলম্বে” গ্রেপ্তার করা হবে।
বিবৃতিতে দলটির নাম উল্লেখ না করলেও স্পষ্টভাবে বলা হয়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মৃত্যু ও সরকারি সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত করার ঘটনায় জড়িত নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে বিচার করা হবে।
প্রদেশটি দলটির নেতৃত্বকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ফোর্থ স্কেজ্যুলে অন্তর্ভুক্ত করারও পরিকল্পনা করছে, যার ফলে তাদের চলাফেরা ও রাজনৈতিক কার্যক্রমে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ হবে।
সরকার দলটির সব সম্পদ ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে আওকাফ বিভাগের অধীনে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি দলটির পোস্টার, ব্যানার ও বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা হবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হবে এবং ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হবে। লাউডস্পিকার আইন ভঙ্গের ক্ষেত্রেও কঠোর শাস্তির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এই পদক্ষেপগুলো মূলত প্রদেশে সাম্প্রতিক অস্থিরতার পর শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী টিএলপি কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে মুরিদকেতে তাদের প্রতিবাদ শিবির ভেঙে দেয়, যা সহিংস সংঘর্ষে রূপ নেয়। এক স্টেশন হাউস অফিসার নিহত হন এবং অন্তত ৪৮ পুলিশ সদস্য আহত হন, যাদের মধ্যে ১৭ জন গুলিবিদ্ধ।
টিএলপি কর্মীরা ১৪৪ ধারা থাকা সত্ত্বেও ইসলামাবাদের দিকে পদযাত্রা শুরু করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। এতে অন্তত ৪০টি সরকারি ও বেসরকারি গাড়ি পুড়ে যায় এবং কয়েকটি দোকানেও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে তিনজন টিএলপি কর্মী, এক পথচারী নিহত এবং অন্তত ৩০ জন সাধারণ নাগরিক আহত হন।
বৈঠকে আফগান নাগরিকদের বিষয়েও আলোচনা হয়। প্রাদেশিক সরকার অবৈধভাবে অবস্থানরত আফগান নাগরিকদের শনাক্ত করতে রিয়েল-টাইম ডেটা সংগ্রহ ও কর জালে অন্তর্ভুক্তির পরিকল্পনা করেছে।
এ ছাড়া অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান শুরু হবে। নাগরিকদের এক মাসের মধ্যে বৈধ অস্ত্র নিবন্ধনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নতুন অস্ত্রের লাইসেন্স সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে, এবং অবৈধ অস্ত্র রাখলে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড ও ২০ লাখ রুপি জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।