নতুন নকশার ব্যাংক নোট বাজারে ছাড়ার খবরে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলেও ডিজাইন প্রকাশের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়। কেউ বলছেন এটি শিশু সুলভ ডিজাইন, কেউবা একে বলছেন অগভীর চিন্তার ফল। অনেকে আবার প্রশ্ন তুলেছেন ডিজাইনারদের অভিজ্ঞতা নিয়েও।
গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো থেকে বাদ পড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের নাম ও প্রতিকৃতি। এই ধারাবাহিকতায় ব্যাংক নোট থেকেও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি সরানোর দাবি উঠতে থাকে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় ১০ মাসের মাথায় সেই দাবি বাস্তবায়ন করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, জুন মাসের শুরু থেকেই নতুন নকশার ২, ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার মোট ৯ ধরনের নোট বাজারে আসছে। প্রতিটি নোটেই রয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, স্থাপত্য ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চিত্র।
সংসদ ভবন, স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার, সুপ্রিম কোর্ট, ধর্মীয় উপাসনালয়, সুন্দরবন, মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ও চিত্রকর্মের পাশাপাশি ৫, ১০ ও ২০০ টাকার নোটে রয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রতীকী গ্রাফিতি।
তবে এসব নোটের চূড়ান্ত রূপ নিয়ে সন্তুষ্ট নন নেটিজেনরা। সামাজিক মাধ্যমে অনেকে মন্তব্য করেছেন, “নোটগুলো দেখতে অদ্ভুত” ও “দায়সারা ভাব প্রকাশ পেয়েছে পুরো ডিজাইনে।” অনেকে বলছেন, সাধারণ মানুষের প্রস্তাবিত ডিজাইনগুলো ছিল আরও চিত্তাকর্ষক।
আরও পড়ুন:
- ব্যাংকে নেই নতুন টাকা, গুলিস্থানে সিন্ডিকেটের হাতে বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকার নোট
- ঈদুল আজহার আগে বাজারে এলো বাংলাদেশের নতুন ডিজাইনের টাকা
- ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোটে থাকছে ইতিহাস, আন্দোলন ও শহীদদের প্রতীক
২০০ টাকার নোটের নকশা নিয়ে আগেই সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট ফাহাম আব্দুস সালামের একটি ফেসবুক পোস্ট সেই সমালোচনায় ঘি ঢালে। যদিও তখন বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, সেটি ছিল কেবল নমুনা। পরবর্তীতে অনেক বিতর্ক সত্ত্বেও ওই নোটটিকেই চূড়ান্ত করা হয়।
বর্তমান গভর্নর আহসান হাবিব মনসুরের স্বাক্ষরিত এই নতুন নোটগুলো ১ জুন থেকে বাজারে পাওয়া যাবে। তবে পুরনো নোট এবং ধাতব মুদ্রাগুলো আগের মতোই চালু থাকবে।
বিশ্লেষকদের মতে, এমন একটি বড় নীতিগত পরিবর্তনে জনগণের মতামত ও স্বচ্ছ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি ছিল। কারণ, মুদ্রার নকশা শুধুই প্রযুক্তিগত কাজ নয়, এটি একটি দেশের ভাবমূর্তি বহন করে।