দুর্দান্ত আক্রমণভঙ্গি আর রোমাঞ্চকর খেলার ধারা নিয়ে পরিচিত প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন (পিএসজি) এবার ক্লাব বিশ্বকাপে নিজেদের প্রমাণ করেছে ভিন্ন এক দিক দিয়ে। শক্তিশালী বায়ার্ন মিউনিখকে নয়জন খেলোয়াড় নিয়ে হারিয়ে তারা পৌঁছেছে প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে।
শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে লুইস এনরিকের দল ২-০ গোলে জয় পায়। ম্যাচের শেষ দিকে উইলিয়ান পাচো ও লুকাস হার্নান্দেজ লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে পিএসজি একাদশের নয়জন নিয়ে শেষ পর্যন্ত খেলে।
ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ সেভ করেন গোলরক্ষক গিয়ানলুইজি দোন্নারুমা। জয় নিশ্চিত করে দেন দেশাইরে দোয়ে এবং উসমান দেম্বেলে। আগামী সেমিফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদ, যেখানে মুখোমুখি হবেন সাবেক সতীর্থ কিলিয়ান এমবাপ্পে।
পিএসজির অধিনায়ক মার্কিনিয়োস বলেন, “এই ম্যাচ আমাদের শিক্ষা দিয়েছে, আমাদের কমফোর্ট জোন থেকে বের করেছে। আমরা নিজেদের মধ্যে প্রতিনিয়ত আলোচনা করি, কারণ জেতা কঠিন, কিন্তু ধারাবাহিকভাবে জেতা আরও কঠিন।”
তিনি বলেন, “প্রথম লাল কার্ডের পরেই আমি আমার সতীর্থদের চোখে লড়াইয়ের মানসিকতা দেখেছি। আমরা একসাথে সিদ্ধান্ত নিই, এই ম্যাচ আমাদের এবং আমরা গোল খাব না। আমাদের দল এখন মানসিকভাবে প্রস্তুত।”
কোচ লুইস এনরিক বলেন, “আমরা একসঙ্গে কষ্ট করেছি, একসঙ্গে উন্নতি করেছি। হয়তো জিতবো, হয়তো হারবো, হয়তো ড্র করবো, কিন্তু আমাদের মানসিকতা ও আচরণ সবার সামনে থাকবে।”
চ্যাম্পিয়নস লিগে পিএসজি প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতে এই মে মাসে। সেই যাত্রায় তারা লিভারপুলকে টাইব্রেকারে হারিয়ে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নেয়। কোচ এনরিক সেই সময়েই বলেছিলেন, “এই দল এখন যেকোনো কঠিন পরিস্থিতি সামাল দিতে পারে।”
শুধু বায়ার্ন নয়, সেমিফাইনালে আর্সেনালের বিপক্ষেও প্রথম লেগে কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তোলে পিএসজি। এমনকি Coupe de France-এর সেমিফাইনালে ডানকার্কের কাছে ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকেও ম্যাচে ফিরে এসে জয় তুলে নিয়েছে ৪-২ ব্যবধানে।
ক্লাবের মানসিক দৃঢ়তার পেছনে এনরিকের অবদানকে গুরুত্ব দিয়ে মার্কিনিয়োস বলেন, “তিনি দলে সেই মানসিকতা এনেছেন, যেটা আগে ছিল না। খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে শুরু থেকেই কাজ করেছেন। কঠিন সময়ে কীভাবে খেলতে হবে, সেটাই শিখিয়েছেন।”
এদিকে বায়ার্ন কোচ ভিনসেন্ট কোম্পানি জানান, “এনরিকের উপর এক সময় অনেক সমালোচনা হয়েছিল। এখন তার দল ইউরোপ জয় করেছে। এটা কেউ কল্পনাও করেনি।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন দৃঢ়তা ও জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে বিশ্ব শিরোপাও জিততে পারে ফরাসি ক্লাবটি।