২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে “বিভিন্নভাবে হতাশাজনক” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘জাতীয় বাজেট ২০২৫–২৬: পেছনে পড়ে থাকা জনগণের জন্য কী আছে’ শীর্ষক আলোচনায় সূচনাপর্বে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “এটি অনেকভাবে হতাশার বাজেট হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম কিছু নতুনতা আসবে, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি প্রচলিত ধারা অনুসরণ করেছে।”
সিটিজেন’স প্ল্যাটফর্ম ফর এসডিজি, বাংলাদেশ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডি’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, “এই বাজেটের পেছনে বড় প্রত্যাশা ছিল, কারণ সরকার একটি বড় রাজনৈতিক উত্তরণের মধ্য দিয়ে এসেছে। বৈষম্যবিরোধী চেতনায় এই সরকার গঠিত হওয়ায় বাজেটেও তার প্রতিফলন আশা করেছিল জনগণ।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, প্রস্তাবিত বাজেটটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের আগেই জনসম্মুখে চলে এসেছে। “সাধারণত বাজেট মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর প্রকাশ পায়। এবার সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি,” মন্তব্য করেন তিনি।
মূলপ্রবন্ধে তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, “ম্যাক্রোইকোনমিক বাস্তবতা বাজেট কাঠামোতে যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি। রাজস্ব আদায়ের কাঠামো এখনও অবাস্তব এবং আগের সরকারের ধারা অব্যাহত রয়েছে।”
তিনি উল্লেখ করেন, কালো টাকা বৈধ করার বিধান এখনও রয়েছে, যার কোনও যৌক্তিক ব্যাখ্যা বাজেটে দেওয়া হয়নি।
“পরোক্ষ করের ওপর নির্ভরতা থেকে সরে না আসায় নিম্নআয়ের মানুষের ওপর ভার পড়ে যাচ্ছে। এতে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব কাঠামোগত পরিবর্তন আসছে না। বাজেটে বাস্তবায়নের জায়গায়ও সীমাবদ্ধতা রয়ে যাচ্ছে,” যোগ করেন তিনি।
LNOB (Leave No One Behind) গোষ্ঠীর জন্য অগ্রাধিকার খাতে তেমন পরিবর্তন নেই বলেও জানান সিপিডি গবেষক।
“এডিপি বরাদ্দেও তেমন কোনো অগ্রাধিকার বা প্রকল্পের মানোন্নয়নের ছাপ দেখা যায়নি,” বলেন তৌফিকুল।
তিনি আরও বলেন, বাজেট প্রক্রিয়া এখনও অংশগ্রহণমূলক নয়, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নেই, এবং তথ্যের স্বচ্ছতাও দুর্বল রয়ে গেছে।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় কাঠামোগত সংস্কার না হলে বাস্তবায়নে জটিলতা দেখা দিতে পারে এবং জনগণের আস্থা আরও হ্রাস পেতে পারে।