প্রতিনিধিত্বমূলক ভোটব্যবস্থার পক্ষে যারা কথা বলছেন, তারা মূলত আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পথ খুঁজছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ আয়োজিত একটি স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সভাটি গত বছরের জুলাই মাসের গণআন্দোলনের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
দুদু বলেন, “যারা নির্বাচনের ভয়ে আছে, যারা অন্ধকারের শক্তিকে ও আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনতে চায়, তারাই এখন এই প্রতিনিধি ভোটব্যবস্থার কথা বলছে। এটা আর যথেষ্ট নয়। কেউ চাইলে দেশের জনগণের সামনে তাদের এজেন্ডা উপস্থাপন করুক এবং ভোটে জয়ী হয়ে তা বাস্তবায়ন করুক। কিন্তু জোর করে কারও ওপর এমন ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়।”
তিনি আরও বলেন, “এই আন্দোলন গত বছর শুরু হয়নি। ১৫-১৬ বছর ধরে চলমান সংগ্রামের ফসল এটা। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকার আদায়ের সংগ্রাম। এখন হঠাৎ করে কেউ এসে প্রতিনিধি ভোটব্যবস্থা চাপিয়ে দিতে চায়। এটা আসলে জনগণের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার নতুন ফাঁদ। আওয়ামী লীগকে আবার ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা। কিন্তু এই ষড়যন্ত্র সফল হবে না।”
বিএনপি নেতা বলেন, “জুলাই-আগস্ট মাস আমাদের জন্য আত্মমর্যাদার স্মৃতি। এই সময় জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি তৈরি হয়েছিল। এই সময়কে বিতর্কিত করা উচিত নয়। যেসব তরুণ, শ্রমজীবী, প্রবীণ মানুষ এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, তারা সবাই জাতীয় বীর। তারা রক্ত দিয়েছেন দেশের মুক্তির জন্য। কিন্তু সেই মুক্তির সংগ্রাম এখনো অসম্পূর্ণ। তা বাস্তবায়নে দরকার একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন।”
তিনি বলেন, “নির্বাচনের তারিখ ফেব্রুয়ারিতে ঠিক হয়ে গেছে। এখন আর বসে থাকার সময় নেই। প্রস্তুতি নিতে হবে। যেখানেই থাকি, আমাদের নির্বাচনমুখী হতে হবে। কারণ, ষড়যন্ত্রের শক্তি এই নির্বাচনকে ঠেকাতে চায়। এই নির্বাচনেই শহীদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানানো সম্ভব।”
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতার বক্তব্যের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে যে, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রতিনিধি ভিত্তিক ভোটব্যবস্থা বিএনপির দৃষ্টিতে একটি কৌশলী রাজনৈতিক পাঁয়তারা, যা তারা জনগণের ভোটাধিকার ও জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী মনে করছে।