লন্ডনে ড. ইউনুস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্ধারিত জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সীমা নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বেশিরভাগ দল এই আলোচনাকে স্বাগত জানালেও কেউ কেউ সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
লন্ডন বৈঠকের পর জানা যায় আগামী জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে বিদেশের হোটেলে বসে এমন রূপরেখা তৈরি করাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে না এনসিপি।
দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, “সরকার একটি দলের সাথে বসে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটি সঠিক নয়। আমরা চাই বাংলাদেশের মাটিতে, জনগণের দাবি অনুযায়ী এ ধরনের সিদ্ধান্ত হোক। বিদেশের হোটেলে নয়।”
এবি পার্টির পক্ষ থেকেও কিছুটা দ্বিধা প্রকাশ করা হয়েছে। দলটির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু জানান, “নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে এগিয়ে আনার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। তবে প্রস্তুতির বিষয়গুলো কেমন তা দেখতে হবে। প্রস্তুতি ঠিকঠাক থাকলে এবং সব রাজনৈতিক দল সহযোগিতা করলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়া ভালো হবে।”
আরও পড়ুন: রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন, সম্ভাব্য তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি
অন্যদিকে বিএনপির সাথে যুগপথ আন্দোলনকারী দলগুলো বৈঠক এবং সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “আলোচনায় বোঝা গেছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান এবং বিএনপির মধ্যে যে দূরত্ব ছিল তা কিছুটা ঘুচেছে।”
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি জানান, “একটি ইতিবাচক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে অনাস্থা থাকলে তা দেশের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না।”
ধর্মভিত্তিক দলগুলোর পক্ষ থেকেও এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, “জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আর কোন সংশয় থাকবে না। আশা করি সব দল এই সমঝোতাকে সম্মানের সাথে গ্রহণ করবে।”
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, “এই বৈঠকের ফলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি সুফল তৈরি হয়েছে বলে মনে করি।”
সবশেষে, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা নির্বাচন ও সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে ঐক্যমতের ভিত্তিতে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এখন দেখার বিষয়, এই আলোচনা বাস্তবায়নের পথে কতটা অগ্রগতি হয়।