সংবিধান সংশোধন ব্যতিরেকে সংস্কারের বিষয়ে একমত হয়েও তা বাস্তবায়নে সময়ক্ষেপণ না করতে ঐক্যমত কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ঐক্যমত কমিশনের দ্বিতীয় দফার বৈঠকে এই ঐক্য গড়ে ওঠে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে হওয়া এই বৈঠকে অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি সহ নানা রাজনৈতিক দল ও জোট। বৈঠকে প্রায় দেড় ঘণ্টার আলোচনায় ৫ আগস্টের আগেই ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্ত করে তা প্রকাশের বিষয়ে একমত হন নেতারা।
বিএনপির পক্ষে থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদ জানায়, সংবিধান সংশোধনের বিষয় বাদ দিলে এক মাসের মধ্যেই সকল বাস্তব সংস্কার কার্যকর করা সম্ভব। দলটির পক্ষ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যেই সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়, যা অধিকাংশ দল সমর্থন জানায়। তবে জামায়াতসহ কিছু ধর্মভিত্তিক দল নির্বাচনের সময় বাড়ানোর পক্ষে মত দেয়।
সংস্কার সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা থাকলেও বৈঠকে নির্বাচন ইস্যুও বিশেষ গুরুত্ব পায়। এনসিপির নাহিদ ইসলাম জানায়, জুলাই সনদ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন তারিখ ঘোষণা না করাই ভালো হবে। কারণ আগে নির্বাচন ঘোষণা দিলে তা সংস্কার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে।
আরও পড়ুন:
- অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অগণতান্ত্রিক পথে হাঁটছে: সালাহউদ্দিন আহমেদ
- হক ও ইনসাফের রাজনীতি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিলেন নাহিদ ইসলাম
কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভেদ নেই, সেগুলো এক মাসের মধ্যেই বাস্তবায়ন করা যাবে নির্বাহী আদেশ ও অফিস আদেশের মাধ্যমে। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, একটি গ্রহণযোগ্য সনদ তৈরির মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচন ও সংস্কারের পথ সুগম হবে।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী নেতারা বলেন, জাতীয় স্বার্থে কেউ কেউ নিজ নিজ অবস্থান থেকে সরে আসতে রাজি হলেও, দলীয় স্বার্থে কোনো চাপ বা আপস কাম্য নয়। জাতীয় স্বার্থে যেসব সংস্কার জরুরি, তা দ্রুত সম্পন্ন করতে সকল দলের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলো আরও দাবি জানায়, ভবিষ্যতে যেন এই বৈঠকগুলো আলাদাভাবে অনুষ্ঠিত হয়, যাতে প্রতিটি দলের মতামত স্পষ্টভাবে উঠে আসে।
পরবর্তী বৈঠকে জুলাই সনদের খসড়া চূড়ান্ত করে তা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে কমিশন। নেতারা আশাবাদী, এই প্রক্রিয়াই জাতিকে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাবে।