ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে অনুষ্ঠিত ১৭তম ব্রিকস সম্মেলনে পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি একে শুধু ভারতের ওপর নয়, সমগ্র মানবতার ওপর আঘাত হিসেবে অভিহিত করেন।
রবিবার ‘শান্তি, নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থার সংস্কার’ বিষয়ক সেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সন্ত্রাসবাদ মানবতার অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। সম্প্রতি পহেলগাঁও-এ যে অমানবিক ও কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে, তা গোটা মানবজাতির ওপর হামলার শামিল।”
বক্তব্যে মোদি জোর দিয়ে বলেন, সন্ত্রাসবাদের মতো বিষয়ে কোনো দ্বৈত নীতি চলতে পারে না। “যে কোনো দেশ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসকে সমর্থন দিলে, তার মূল্য তাকে দিতেই হবে।”
ব্রিকস সম্মেলনে প্রকাশিত ঘোষণায়ও জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও-এ সংঘটিত হামলাকে কঠোর ভাষায় নিন্দা জানানো হয়েছে এবং সন্ত্রাসবাদের সকল রূপ ও বহুমাত্রিকতাকে প্রতিহত করার সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
সম্মেলনে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও সংলাপের মাধ্যমে বৈশ্বিক সংকট সমাধানে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করেন মোদি। তিনি বলেন, “বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা আমাদের সম্মিলিত স্বার্থ ও ভবিষ্যতের ভিত্তি। এই মূল্যবোধগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই আমাদের এগিয়ে আসতে হবে।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো পহেলগাঁও হামলার নিন্দা জানিয়ে ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে।
এছাড়াও, বিশ্বব্যাপী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতে ব্যাপক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন মোদি। তিনি বলেন, “গ্লোবাল সাউথ বা দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলো এখনও পর্যন্ত জলবায়ু অর্থায়ন, টেকসই উন্নয়ন এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে কেবল প্রতিশ্রুতির আশ্বাসই পেয়েছে, বাস্তব কিছু নয়।”
সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী ‘ফ্যামিলি ফটো’ তে অংশগ্রহণ করেন মোদি। রিও ডি জেনেইরোর মডার্ন আর্ট মিউজিয়ামে এই ছবি তোলা হয়, যা ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর ঐক্যের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
৭ থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত চলা ব্রিকস সম্মেলনে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার পাশাপাশি নতুন সদস্য রাষ্ট্র মিসর, ইথিওপিয়া, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইন্দোনেশিয়ার নেতারা অংশগ্রহণ করেন।