Wednesday, June 25, 2025
Homeবিনোদন‘Elio’ ব্যর্থতার পর পিক্সারের সামনে নতুন পথচলার চ্যালেঞ্জ

‘Elio’ ব্যর্থতার পর পিক্সারের সামনে নতুন পথচলার চ্যালেঞ্জ

মূল চরিত্র নিয়ে তৈরি নতুন ছবি দর্শক টানতে ব্যর্থ, ফ্র্যাঞ্চাইজ-নির্ভর কৌশলে ফিরছে স্টুডিও

বিশ্ববিখ্যাত অ্যানিমেশন স্টুডিও পিক্সার তাদের সর্বশেষ অরিজিনাল অ্যানিমেশন Elio নিয়ে বড় প্রত্যাশা করেছিল। তবে বাস্তবে সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ২০ জুন শুরু হওয়া সপ্তাহান্তে ছবিটি যুক্তরাষ্ট্রে আয় করেছে মাত্র ২০.৮ মিলিয়ন ডলার এবং আন্তর্জাতিকভাবে ১৪ মিলিয়ন ডলার। এটি পিক্সারের ইতিহাসে সবচেয়ে কম উদ্বোধনী আয়ের রেকর্ড গড়েছে।

ছবিটি একটি এতিম শিশুর ওপর ভিত্তি করে নির্মিত, যার মহাকাশে অপহৃত হওয়ার ইচ্ছা সত্যি হয়ে যায়। শক্তিশালী রিভিউ ও দর্শক প্রতিক্রিয়া সত্ত্বেও ‘এলিও’ বিশ্বব্যাপী ৩০০ মিলিয়ন ডলার আয় করতেও হিমশিম খাচ্ছে।

পিক্সার ও ডিজনি নেতৃত্ব যদিও প্রকাশ্যে আশাবাদী, তবে ভেতরে এই ফলাফলকে কেউই অস্বীকার করছে না। তবে এর মানে এই নয় যে স্টুডিও অরিজিনাল গল্প বলা থেকে পিছিয়ে আসছে। বরং সূত্র জানায়, পিক্সার ইতিমধ্যেই একটি ভারসাম্যপূর্ণ কৌশলে ফিরছে, যেখানে সিক্যুয়েলের পাশাপাশি থাকবে নতুন আইপি।

২০২৩ সালে ‘ইনসাইড আউট ২’ ছবিটি ১৫৪ মিলিয়ন ডলার দিয়ে উদ্বোধন করে বছরজুড়ে বিশ্বব্যাপী আয় করেছে ১.৬৯ বিলিয়ন ডলার। এটিই এখন পর্যন্ত পিক্সারের সর্বোচ্চ আয়কারী ছবি এবং বিশ্বব্যাপী সর্বোচ্চ আয় করা অ্যানিমেটেড সিনেমা। আর ২০১৭ সালের ‘কোকো’ ছবিটি শুধু একটি সিনেমাই নয়, একটি থিম পার্ক আকর্ষণ এবং এখন সিক্যুয়েল নির্মাণাধীন।

‘এলিও’ ছিল ২০২০ সালের পর পিক্সারের ষষ্ঠ অরিজিনাল ছবি। এর আগে ছিল ‘অনওয়ার্ড’, ‘সোল’, ‘লুকা’, ‘টার্নিং রেড’ ও ‘এলিমেন্টাল’। যদিও ‘এলিমেন্টাল’ শুরুর দুর্বলতা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত ৫০০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছিল।

ডিজনি এবং পিক্সার এখন ভবিষ্যতের রোডম্যাপে রেখেছে ২০২৬ সালের ‘হপারস’ এবং ‘টয় স্টোরি ৫’। এরপর আসবে ২০২৭ সালের অরিজিনাল প্রজেক্ট ‘গ্যাট্টো’ ও অনির্ধারিত ‘ইনক্রেডিবলস ৩’ ও ‘কোকো ২’।

অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী ইলুমিনেশন ও ড্রিমওয়ার্কস আরও বেশি ফ্র্যাঞ্চাইজ নির্ভর। ‘ডেসপিকেবল মি’, ‘মিনিয়নস’, ‘সিং’, ‘মারিও’ বা ‘হাউ টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন’-এর মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি থেকে তারা বহুবার সফল হয়েছে। পিক্সার বরাবরই সিক্যুয়েল নির্মাণে ধীর গতিতে এগিয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিমারির সময় ডিজনির সিদ্ধান্তে তিনটি পিক্সার সিনেমা সরাসরি ডিজনি প্লাসে মুক্তি পায় — ‘টার্নিং রেড’, ‘লুকা’ ও ‘সোল’। ফলে পরিবারগুলো অপেক্ষা করে ঘরে বসেই সিনেমা দেখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। এটি আজও প্রভাব ফেলছে, বিশেষ করে ‘এলিও’র মতো নতুন গল্পে।

কমস্কোর বিশ্লেষক পল ডারগারাবেডিয়ান বলেন, “PG রেটিং হলেই বিশাল আয় হবে তা নয়, যদি না সেটি সুপরিচিত কোনো ব্র্যান্ড বা চরিত্র হয়। এলিও’র ক্ষেত্রে সেই সুবিধা ছিল না।”

তবে ছবির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক সূত্র বলেন, “এলিওর আয় আমাদের ইচ্ছার প্রতিফলন নাও হতে পারে, তবে এই ধরনের ছবি এখনও প্রমাণ করে পিক্সার সৃজনশীলতাকে গুরুত্ব দেয়। ভবিষ্যতে পিক্সার নতুন গল্পকে আরও ভালোভাবে উপস্থাপন করতে চায়, প্রিয় চরিত্রদের সংরক্ষণ করেই।”

স্টুডিওর উদ্দেশ্য এখনো একই — এমন গল্প বলা, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মানুষকে ছুঁয়ে যেতে পারে।

RELATED NEWS

Latest News