ক্লাব বিশ্বকাপের মূল আকর্ষণ ছিল ইউরোপের বাইরের ক্লাব ও সমর্থকদের ফুটবল আবেগ দেখার সুযোগ। তবে টুর্নামেন্ট যত এগোচ্ছে, ফুটবল ভক্তরা পাচ্ছেন আরেকটি দারুণ উপহার—পেপ গার্দিওলার নেতৃত্বে পুনর্গঠিত ম্যানচেস্টার সিটি।
গত বছর যেখানে সিটির পারফরম্যান্সে ছন্দপতন দেখা গিয়েছিল, এবার ক্লাব বিশ্বকাপে নতুন আঙ্গিকে ফিরেছে তারা। বৃহস্পতিবার জুভেন্টাসকে ৫-২ গোলে হারিয়ে নিজেদের সামর্থ্যের বার্তা দিয়েছে দলটি।
প্রিমিয়ার লিগে গত আট মৌসুমে ছয়টি শিরোপা জেতা ম্যান সিটি গত মৌসুমে লিভারপুলের চেয়ে ১৩ পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে শেষ করেছিল। পারফরম্যান্সে নেতিবাচকতা দেখে অনেকেই ভাবছিলেন, হয়তো গার্দিওলার যুগ শেষের পথে।
তবে সেসব ভাবনার জবাব দিয়েছেন গার্দিওলা নিজেই। জুভেন্টাস ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, খেলোয়াড়রা বুঝছে আমাদের আবার সেই আগের অবস্থানে ফিরতে হলে কী করতে হবে।”
নতুন মৌসুমে মধ্যমাঠে তিজজানি রেইজেন্ডার্স ও রায়ান চেরকি এবং লেফটব্যাক হিসেবে রায়ান আইট-নুরিকে দলে টেনে গার্দিওলা গড়ে তুলছেন এক নতুন রূপের সিটি। তাদের পারফরম্যান্সে মিলছে ইতিবাচক ইঙ্গিত।
জুভেন্টাসের বিপক্ষে ম্যাচে দেখা গেছে, আগের চেনা ছোট ছোট পাসের ধারার পরিবর্তে বেশি গতিময় এবং ডান–বাঁ পাশ দিয়ে আক্রমণাত্মক ফুটবলে ফিরেছে সিটি। ফুলব্যাক মাতেউস নুনেস ও আইট-নুরি উইঙ্গার সাভিনিও ও জেরেমি ডোকুর সঙ্গে মিলে উইংয়ে চাপ সৃষ্টি করেন বারবার।
২০২২ সালে আর্লিং হলান্ড আসার পর থেকেই সিটির খেলার ধরনে এসেছে পরিবর্তন। দীর্ঘ পাস, আক্রমণভিত্তিক খেলা এবং নতুন কৌশলের সংমিশ্রণ নিয়ে মাঠে নামছে তারা। এমনকি গোলরক্ষক এডারসনের পাস নিয়ে গার্দিওলার উচ্ছ্বাস তা-ই বোঝায়। তিনি বলেন, “এডারসন ছিল অসাধারণ কোয়ার্টারব্যাক। ওমার আর হলান্ডকে নিখুঁত লং পাস দিয়েছে।”
তবে গার্দিওলার “পেপবল” কি তবে মরে যায়নি? বরং, তা রূপান্তরিত হয়েছে—সময়োপযোগী এক পদ্ধতিতে। আগের মতোই পজিশন ধরে রেখে খেলা, তবে সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দ্রুত গতি ও চেপে ধরার কৌশল। পিএসজির চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের ক্ষেত্রেও এমন কৌশল সফলতা এনেছিল।
সিটির জন্য আল-হিলালের বিপক্ষে ম্যাচ হবে এক কঠিন পরীক্ষা। সৌদি ক্লাবটি গ্রুপ পর্বে রিয়াল মাদ্রিদ ও সালজবুর্গের সঙ্গে ড্র করে এবং মেক্সিকোর পাচুকাকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠে। তাদের দলে রয়েছেন প্রাক্তন সিটি খেলোয়াড় জোয়াও ক্যান্সেলো, নেপোলির কালিদু কুলিবালি এবং পর্তুগিজ মিডফিল্ডার রুবেন নেভেস।
তবে জুভেন্টাসকে যেভাবে ভেঙে দিয়েছে সিটি, তাতে দলটির আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে। দীর্ঘদিনের নিরাশার পর এবার ট্রফি ও বার্তা নিয়ে মৌসুম শেষ করার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে তারা।