বিনোদন ডেস্ক: পেড্রো পাসকেল মার্ভেল ইউনিভার্সের অন্যতম জটিল চরিত্রে অভিনয় করতে যাচ্ছেন।
দ্য লাস্ট অব আস সিরিজের এই অভিনেতা এবার মার্ভেলের নতুন সিনেমা The Fantastic Four: First Steps-এ রিড রিচার্ডস চরিত্রে অভিনয় করছেন। চরিত্রটির ডাকনাম ‘Mr. Fantastic’। যদি আপনি ভাবেন তিনি শুধু এক গাম্ভীর্যপূর্ণ বিজ্ঞানী যাঁর শরীর লম্বা হয়, তাহলে পাসকেল চাইবেন আপনি আরেকবার ভেবে দেখুন।
“এই চরিত্রটির ভেতরে সীমাহীন স্তর রয়েছে,” বললেন পাসকেল, Empire ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে।
এই মন্তব্যটা বেশ বড় মাপের। কিন্তু তিনি সেটা একদম আন্তরিকভাবে বললেন।
রিড রিচার্ডস—মার্ভেলের প্রথম সুপারহিরো দলের নেতা। তিনি একাধারে বিজ্ঞানী, টিমের প্রযুক্তিগত ব্রেন, বাস Baxter Building এর উদ্ভাবন-ভরা ল্যাবের মালিক। ব্যক্তিজীবনে তিনি সু স্টর্মের স্বামী, আর এখন শিগগিরই বাবা হতে যাচ্ছেন।
আর তাদের পৃথিবী? সেটা সরাসরি গ্যালাকটাসের টার্গেটে।
First Steps সিনেমার গল্প আবর্তিত হচ্ছে রিড ও সু স্টর্মকে নিয়ে। সু স্টর্ম, যিনি গর্ভবতী (অভিনয়ে ভেনেসা কার্বি), আর অন্যদিকে গ্যালাকটাস নামক মহাজাগতিক হুমকি ধেয়ে আসছে তাদের পৃথিবীর দিকে।
পরিস্থিতি একটুও সহজ নয়।
“রিড সবকিছুর মধ্যে ভয় খোঁজে নেয়,” বললেন পাসকেল। “তার মস্তিষ্ক একটি গাণিতিক স্তরে হুমকির বিশ্লেষণ করে, কিন্তু একইসাথে সে আবেগপ্রবণও। এটা ছিল এক অদ্ভুত দ্বন্দ্ব।”
পাসকেল বলছেন, রিড কোনো একমুখী সুপারহিরো নয়। সে ভবিষ্যতের বিপদকে আগে থেকেই আন্দাজ করে, গণনা করে, আর সেই ভার নিয়ে জীবন চালায়। কিন্তু তারপরও তাকে স্বামী হতে হবে। বাবা হতে হবে।
এই দ্বৈততা নিয়েই পাসকেল চরিত্রটিকে বুঝতে চেয়েছেন।
পরিচালক ম্যাট শ্যাকম্যানের ভাষায়, এই গভীরতা জরুরি ছিল।
“আমি এমন একজন অভিনেতাকে খুঁজছিলাম যার মধ্যে অনেক দিক থাকতে পারে,” বললেন শ্যাকম্যান। “রিড রিচার্ডস কেবল বিজ্ঞানী নন। তিনি একজন স্বামী, নেতা, বন্ধু এবং বাবা। পেড্রোকে দেখেই আমি জানতাম, সে পারবে।”
শ্যাকম্যান রিডকে শুধু একজন মেধাবী মানুষ হিসেবে দেখাতে চাননি। তিনি চেয়েছেন সেই মানুষটির ভেতরের জটিলতাও দেখাতে।
রিড রিচার্ডস তেমন কেউ নন যিনি খোলামেলা কথা বলেন। তিনি সবসময় কয়েক ধাপ এগিয়ে ভাবেন। কখনো সেটা কাজে আসে, আবার কখনো সে কারণে সম্পর্ক ভেঙে পড়ে।
এই চিন্তার ভেতরেই পরিচালক চরিত্রটিকে সাজিয়েছেন। আজকের সিনেমায় যেখানে সুপারহিরোদের মানসিক চাপ, ক্লান্তি ও সম্পর্কের দ্বন্দ্ব দেখা যায়, সেখানে রিডের মত চরিত্র যেন আরও বাস্তব।
এবং এটা থেকেই কিছু প্রশ্ন উঠে আসে।
একজন মানুষ কি অনাগত বিপদ ঠেকাতে গিয়ে বর্তমান সময়ের আনন্দ উপভোগ করতে পারে?
গাণিতিকভাবে সবকিছুর হুমকি পরিমাপ করা যায়, কিন্তু অনুভব করা কি যায়?
আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, Fantastic Four কি অবশেষে সফল হতে পারবে?
এই ফ্র্যাঞ্চাইজির ইতিহাস একটু ঝামেলাপূর্ণ। ২০০৫ সালের সিনেমাটি শিশুসুলভ হলেও মন্দ ছিল না। ২০১৫ সালের রিবুট দর্শকদের সঙ্গে সংযোগই করতে পারেনি।
এই নতুন গল্পটি আরেকটা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে না। বরং অন্য পথে হাঁটছে।
এবারের Fantastic Four একটু বেশি আবেগপ্রবণ। এখানে চরিত্রগুলো প্রশ্ন করে, ভয় পায়, ভাবনা করে। এবং ঠিক সেই জায়গাতেই পাসকেল উপযুক্ত একজন।
তিনি আগেও এমন চরিত্রে অভিনয় করেছেন—The Mandalorian, The Last of Us, এমনকি Game of Thrones-এও।
এইবার stakes আলাদা। কিন্তু প্যাঁচগুলো সেই পুরোনো।
এই চরিত্র দর্শকদের কতটা ছুঁতে পারবে, সেটা সময় বলবে। কিন্তু একটা বিষয় স্পষ্ট—এবারকার রিড রিচার্ডস যেন সত্যিকার মানুষের মতো।
একটা সুপারহিরো চরিত্র, যে ভয় পায়। কিন্তু তবুও ভালোবাসে।