পুরান ঢাকায় স্ক্র্যাপ ব্যবসায়ীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে দেশজুড়ে ক্ষোভ যখন চরমে, তখন রাজধানীর পল্লবীতে আরেকটি চাঁদাবাজি সংক্রান্ত হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে পল্লবীর একে বিল্ডার্স নামক একটি রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানে এ হামলা চালানো হয়।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, চাঁদাবাজদের কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা না দেওয়ায় সশস্ত্র হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা অন্তত চার রাউন্ড গুলি ছোড়ে, এতে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম আহত হন। তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. কাইয়ুম আলী খান পূর্বেই চাঁদার হুমকি পেয়েছিলেন বলে জানান তার ছেলে আমিমুল এহসান। তিনি বলেন, “তিন সপ্তাহ আগে জামিল নামের এক ব্যক্তি আমার বাবার কাছে ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। না দেওয়ায় প্রথমে দুটি হামলা হয়েছে, এমনকি সিসিটিভি ক্যামেরাও খুলে নিয়ে গেছে তারা।”
তিনি আরও বলেন, “শুক্রবার ৩০-৪০ জনের একটি সশস্ত্র দল আমাদের অফিসে হামলা চালায়, গুলি ছোড়ে এবং এক কর্মীকে আহত করে পালিয়ে যায়।”
পল্লবী থানার ওসি শফিউল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, এখনও পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি, তবে তদন্ত চলছে এবং জড়িতদের শনাক্ত করতে চেষ্টা করা হচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার কাইয়ুম আলী খান পল্লবী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন, যেখানে ২৭ জুন ও ৪ জুলাই চাঁদাবাজদের হামলার ঘটনা এবং মৃত্যুর হুমকির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
এ ঘটনার মাত্র দুই দিন আগে, বুধবার সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে এক স্ক্র্যাপ ব্যবসায়ীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। নিহত ব্যবসায়ী সোহাগের পরিবার জানায়, প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়াতেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র ও তদন্ত কর্মকর্তারাও এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন যে, সোহাগ হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ চাঁদাবাজি।
সম্প্রতি রাজধানীতে ক্রমাগত চাঁদাবাজির ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে। সাধারণ মানুষ এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। পুলিশের দাবি, তারা ঘটনার তদন্ত করছে এবং শিগগিরই দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।