পাকিস্তান সরকার জানিয়েছে, তাদের ভূখণ্ডে কারা থাকবে সে সিদ্ধান্ত একমাত্র ইসলামাবাদই নেবে। শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শফকাত আলী খান।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্রান্ডি সম্প্রতি পাকিস্তানকে আহ্বান জানান, ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর আফগান শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর কার্যক্রম স্থগিত করতে। তবে পাকিস্তান তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ২ হাজার ২০০ জন নিহত এবং হাজারো ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়। এর মধ্যেই পাকিস্তান থেকে আফগান শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো বেড়েছে। জাতিসংঘের হিসাবে, সম্প্রতি প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার আফগান শরণার্থী সীমান্তবর্তী ভূমিকম্প দুর্গত এলাকায় ফিরে গেছেন।
পাকিস্তান গত চার দশকের বেশি সময় ধরে আফগান শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে আসছে। সোভিয়েত আগ্রাসন থেকে শুরু করে ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পরও দেশটিতে লাখো আফগান আশ্রয় নেয়। কেউ কেউ সেখানে জন্মগ্রহণ করেছে, আবার অনেকে পশ্চিমা দেশে যাওয়ার পথে অস্থায়ীভাবে অবস্থান করেছে।
তবে ২০২৩ সালে পাকিস্তান সরকার নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করে শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। তখন থেকে ১২ লাখের বেশি আফগানকে দেশটিতে ফিরতে বাধ্য করা হয়েছে। এ বছরের শুরু থেকেই আরও ৪ লাখ ৪৩ হাজার শরণার্থীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বর্তমানে প্রায় ১৩ লাখ নিবন্ধিত আফগান শরণার্থীর প্রুফ অব রেজিস্ট্রেশন (PoR) কার্ড রয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে সর্বশেষ অভিযান শুরু করেছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ ঘোষণা দিয়েছে, আগামী ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের দেশ ছাড়তে হবে, নইলে গ্রেপ্তার ও নির্বাসনের মুখে পড়তে হবে।
পাকিস্তান সরকারের দাবি, এ পদক্ষেপ অন্য দেশগুলোও নেয়, তাই তাদের ক্ষেত্রেও এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। অন্যদিকে জাতিসংঘ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, আফগানিস্তানের বর্তমান মানবিক পরিস্থিতিতে এমন সিদ্ধান্ত শরণার্থীদের জন্য মারাত্মক সংকট তৈরি করবে।