পাকিস্তান ও ইরান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যে ১২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষর করেছে। রোববার ইসলামাবাদে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন। প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান দুই দিনের সরকারি সফরে পাকিস্তান পৌঁছান।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, দুই দেশের প্রতিনিধিরা বাণিজ্য, জ্বালানি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি, সংস্কৃতি, পর্যটন, গণমাধ্যম, কৃষি, সাগরপথ নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস দমনসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। মিরজাভে-তাফতান সীমান্ত গেটের যৌথ ব্যবহার এবং পণ্য সার্টিফিকেশন ও পরীক্ষা স্বীকৃতির জন্যও সমঝোতা হয়েছে।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেন, “দুই দেশের নেতৃত্ব দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে দ্রুত ১০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ইতোমধ্যেই স্বাক্ষরিত নথিগুলোকে বাস্তব চুক্তিতে রূপ দিয়ে লক্ষ্য পূরণে কাজ শুরু হবে।”
তিনি ইরানের ওপর সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানান এবং নিহত সেনা, বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিকদের প্রতি শোক প্রকাশ করেন। শেহবাজ শরিফ পুনরায় জানান, পাকিস্তান শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির অধিকারকে সমর্থন করে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান পাকিস্তানের জনগণ ও সরকারের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, “দুই দেশের সম্পর্ক ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বন্ধনে গভীরভাবে প্রোথিত। আমাদের লক্ষ্য বাণিজ্য বৃদ্ধি ও সহযোগিতা জোরদার করা।”
পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল ও ইরানের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ আতাবাকের মধ্যে আলাদা বৈঠকে সীমান্ত বাণিজ্য সহজীকরণ, বাণিজ্য করিডোর ব্যবহার বৃদ্ধি এবং খাতভিত্তিক অংশীদারিত্বের বিষয়ে একমত হয়। উভয় দেশ যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (JEC) কার্যক্রম দ্রুততর করা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিনিধিদল বিনিময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
নতুন চুক্তি ও সমঝোতা বাস্তবায়িত হলে পাকিস্তান-ইরান বাণিজ্য সম্পর্ক আঞ্চলিক অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।