সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সুইদা প্রদেশে চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৫০০’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস।
সংস্থাটি জানায়, এই মৃতদের মধ্যে ৭৯ জন দ্রুজ যোদ্ধা, ১৫৪ জন বেসামরিক নাগরিক, ২৪৩ জন সরকারি বাহিনীর সদস্য এবং ১৮ জন বেদুইন যোদ্ধা রয়েছেন। এছাড়া সরকারপন্থী বাহিনীর সদস্যদের হাতে ৮৩ জন এবং দ্রুজ যোদ্ধাদের হাতে ৩ জন বেদুইনকে তাৎক্ষণিকভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরও ১৫ জন সরকারি সেনা নিহত হয়েছে।
গত রবিবার থেকে সুইদা প্রদেশে দ্রুজ গোষ্ঠী, বেদুইন সম্প্রদায় এবং সরকারি বাহিনীর মধ্যে উত্তপ্ত সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হয়। এতে প্রচুর প্রাণহানি ঘটে এবং প্রদেশটিতে নিরাপত্তা পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে অবনতির দিকে যায়।
মঙ্গলবার সরকারি সেনা মোতায়েনের পর সংঘর্ষ আরও তীব্র হয়। ইসরায়েলও সরাসরি হস্তক্ষেপ করে সরকারি বাহিনীর অবস্থানে বিমান হামলা চালায়। এরইমধ্যে দামেস্কে সেনা সদর দপ্তরে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনাও ঘটে।
এক টেলিভিশন ভাষণে ইসলামপন্থী অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা জানান, প্রদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দায়িত্ব পুনরায় স্থানীয় সম্প্রদায় নেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
সরকারি বাহিনী বুধবার রাতে প্রদেশ থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে এএফপির এক ফটো সাংবাদিক সুইদা শহরের কেন্দ্রে রাস্তায় পড়ে থাকা অন্তত ১৫টি মৃতদেহের ছবি তুলেছেন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায়, ইসলামপন্থী সরকারের বাহিনী সুইদা থেকে না সরলে হামলা আরও জোরদার করা হবে।
প্রেসিডেন্ট শারা বলেন, “সর্বোচ্চ জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে সুইদায় নিরাপত্তার দায়িত্ব আবারও স্থানীয় নেতাদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, সুইদা প্রদেশে এই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও বিদেশি হস্তক্ষেপ সিরিয়ায় দীর্ঘদিনের অস্থিরতার একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না এলে এটি আরও ভয়াবহ মানবিক সংকটে পরিণত হতে পারে।