রোহিঙ্গা মুসলিম এবং মিয়ানমারের অন্যান্য মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। সংস্থাটি এই জনগোষ্ঠীর মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিষদের ৫১তম অধিবেশনে গৃহীত ‘ইস্তাম্বুল ঘোষণা’-তে এই আহ্বান জানানো হয়। এতে গাম্বিয়ার দায়ের করা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে চলমান মামলায় সফল পরিণতির প্রত্যাশা এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে দ্রুত প্রত্যাবাসনের কথা উল্লেখ করা হয়।
সপ্তাহব্যাপী অধিবেশনে ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ও প্রতিনিধি দলের প্রধানেরা অংশ নেন। তারা সম্মিলিতভাবে ইসরায়েলের আঞ্চলিক অস্থিরতাসৃষ্টিকারী নীতিমালা এবং ইরান, সিরিয়া ও লেবাননের ওপর সাম্প্রতিক হামলার নিন্দা জানান। এসব আক্রমণকে তারা আন্তর্জাতিক আইন এবং ওইসব দেশের সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী বলে অভিহিত করেন।
এই প্রসঙ্গে একটি খোলা প্রান্তিক মন্ত্রী পর্যায়ের যোগাযোগ গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক পক্ষগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা এবং আক্রমণ বন্ধে ভূমিকা রাখবে।
সম্মেলনে ইসলামভীতির (ইসলামোফোবিয়া) ক্রমবর্ধমান প্রবণতা নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। ধর্মীয় বিদ্বেষ, ঘৃণামূলক বক্তব্য, ধর্মীয় উপহাস এবং জাতিগত বৈষম্যকে প্রতিহত করতে বৈশ্বিক ও জাতীয় পর্যায়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
সম্মেলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল, ২০২৬ সালে আজারবাইজানে অনুষ্ঠেয় ইসলামি শীর্ষ সম্মেলনকে স্বাগত জানানো। নেতারা আশা প্রকাশ করেন, এই সম্মেলন মুসলিম বিশ্বে ঐক্য, সংহতি এবং সহযোগিতা আরও জোরদার করবে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে ওআইসির বার্তা এখন আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। মানবাধিকার, শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং টেকসই প্রত্যাবাসনের প্রশ্নে এই ঘোষণার গুরুত্ব অপরিসীম বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা।