রবিবার রাজধানীর বিভিন্ন ফিলিং স্টেশনে অকটেন সংকট দেখা দিয়েছে। এতে মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, কাভার্ড ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা চরম ভোগান্তির শিকার হন।
স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানায়, ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ও জ্বালানি আমদানি বন্ধ থাকার কারণে অকটেন, পেট্রোল ও ডিজেলের সরবরাহ কমে গেছে।
তবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) জানিয়েছে, দেশে এখনও পর্যাপ্ত জ্বালানি মজুদ আছে এবং নতুন একটি চালান মঙ্গলবার পৌঁছাবে।
এক বিপিসি কর্মকর্তা জানান, মূল্যবৃদ্ধির গুজবে কিছু মালিক ইচ্ছাকৃতভাবে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ রেখেছেন। যদিও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী মাসে জ্বালানি দামের কোনো পরিবর্তন আসছে না।
এই ঘোষণার পর withheld করা জ্বালানি পুনরায় বাজারে ছাড়ছে ডিলাররা।
জ্বালানির চাহিদা ও সংকট
বিপিসি ও বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিদিন ১,০০০ থেকে ১,২০০ টন অকটেন ও পেট্রোলের চাহিদা রয়েছে।
দেশের ৭০ শতাংশ যানবাহন, বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও ভারী যানবাহন, অকটেনে চলে।
তিন শতাধিক ফিলিং স্টেশনের অর্ধেকেই অকটেনের উচ্চ চাহিদা থাকে।
মোহাম্মদ সাকিব, আসাদগেটের এম এস তালুকদার ফিলিং স্টেশনের কর্মী, বলেন, “ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে তেল আসা বন্ধ হয়েছে। ফলে ডিপোতে অকটেন ও পেট্রোল কমে গেছে।”
মিরপুরের দিগন্ত ফিলিং স্টেশনের মোহাম্মদ রনি জানান, “আমরা ডিপো থেকে তেল পাচ্ছি না। ইরান থেকে আসা চালান বন্ধ হওয়ায় স্টেশনভিত্তিক সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে।”
৩-৪ দিন সংকট থাকতে পারে
বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটরস, এজেন্টস ও ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ নজমুল হক বলেন, “সরকার যতই বলুক মজুদ আছে, বাস্তবে অকটেন ও ডিজেলের স্টক সীমিত। ইরান থেকে আসা একটি চালান মাঝপথ থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।”
তিনি জানান, নতুন করে ২৫,০০০ টন তেল সিঙ্গাপুর থেকে আনা হয়েছে, যা শিগগিরই পৌঁছাবে।
তিনি আরও বলেন, “অনেকেই আতঙ্কে বেশি করে জ্বালানি কিনছেন। কেউ ৪ লিটার প্রয়োজন হলেও ১০ লিটার নিচ্ছেন। ফলে ৩-৪ দিন হালকা সংকট থাকবে।”
মূল্যবৃদ্ধির গুজব
পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্মকর্তা জানান, ডিপোতে তেল থাকলেও দামের আশায় কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে।
বিপিসির পরিচালক (অপারেশনস) ড. একেএম আজাদুর রহমান বলেন, “মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কায় বাজারে মজুতদারি শুরু হয়। আমাদের ১০-১৫ দিনের রিজার্ভ কমে ৫ দিনে নেমে আসে। তবুও আমরা সংকটে পড়িনি।”
তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে ৫ লাখ টন তেল বহনকারী একটি জাহাজ দেশে পৌঁছাবে। এরপর আর কোনো ঘাটতি থাকবে না।