Thursday, August 14, 2025
Homeরাজনীতিজাতীয় নির্বাচনে বাধার মুখে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা

জাতীয় নির্বাচনে বাধার মুখে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা

নির্বাচনের পূর্বে বিভাজন ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে উত্তপ্ত রাজনীতি

বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনীতিতে অস্থিরতা এবং নানা বাধা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ঐক্যের অভাব এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠে আসছে।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারিক রহমানসহ দলীয় নেতারা অভিযোগ করেছেন, দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ভঙ্গের জন্য নির্বাচন বাধাগ্রস্ত বা বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র চলছে। তারিক রহমান বলেন, “বিভিন্ন মহল দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা ও মানুষের ভোটাধিকারের অধিকার দানে বাধা দিচ্ছে।”

রাজনৈতিক সূত্র বলছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ এবং তার স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সমর্থকরা সক্রিয় থাকায় অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা বাড়ছে। সম্প্রতি পুলিশের হাতে ঢাকায় এক বন্ধুসভায় ২২ জন নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সরকারবিরোধী উস্কানিমূলক কাজ করেছে এবং দলের নির্দেশে সহিংসতা সৃষ্টির পরিকল্পনা নিয়েছে।

রাজনীতির বিরোধী শিবিরও এক নয়। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও বামপন্থী দলগুলো ভিন্ন ভিন্ন ব্লকে বিভক্ত। জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই চুক্তি নিয়ে ব্যাপক মতবিরোধ বিরাজ করছে। বিএনপি ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানিয়েছে, তবে জামায়াত ও তার মিত্ররা তা সংশোধনের দাবি জানাচ্ছে। নির্বাচনের আগে রাজনীতি সংস্কারের ওপরও দ্বন্দ্ব রয়েছে। জামায়াত চায় নির্বাচনের আগে এসব সংস্কার আইনি স্বীকৃতি পাবে, অন্যদিকে বিএনপি মনে করে অনেক বিষয় সংসদে সমাধান হওয়া উচিত।

নামের উল্লেখে ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) প্রধান সমন্বয়কারী নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী সতর্ক করেছেন, আগের “স্বৈরশাসক” আমল যদি থেকে যায় তাহলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। তিনি এও বলেন, গত বছরের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য শহীদদের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দাবি পূরণ না হলে রাজনৈতিক অস্থিরতা অব্যাহত থাকবে।

বিবেচকরা বলছেন, প্রধান দুই রাজনৈতিক ব্লকের সংঘর্ষ রাস্তায় উত্তেজনা এবং নির্বাচন ব্যাহতির কারণ হতে পারে। জামায়াত ইতোমধ্যে সাত দফার দাবি নিয়ে সারা দেশে আন্দোলন শুরু করেছে। এনসিপি, বিএনপি ও তাদের মিত্ররা একই দাবিতে রাস্তায় নামলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাজনৈতিক দলের বাইরের সুযোগসন্ধানীরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে নির্বাচন বিলম্বিত করতে পারে। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলছেন, “শেখ হাসিনা ভারতে থেকে নির্বাচনের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করবেন।”

হাফিজ উদ্দিন আরও জানিয়েছেন, কলকাতায় একটি ‘পার্টি অফিস’ স্থাপন করে নির্বাসিত আওয়ামী লীগ নেতারা সক্রিয়। তারা দেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্ভব না হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।

লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সভাপতি ওলি আহমেদ সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “দেশদ্রোহীদের গ্রেফতার করতে হবে, অস্ত্র জব্দ করতে হবে এবং নির্বাচনের আগে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।”

RELATED NEWS

Latest News