নূরুল হাসান বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের অন্যতম শান্ত ও স্থির স্বভাবের উইকেটকিপার ও ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত। মাঠের ভেতর-বাহিরে তাঁর ধৈর্য এবং মনোবল প্রশংসিত। দেশের সেরা উইকেটকিপারদের মধ্যে তিনি অন্যতম।
তবে সম্প্রতি একটি সময়ের সাক্ষী হয়েছি, যখন নূরুল হাসান তাঁর পরিচিত শান্ত হাসির আড়ালে না লুকিয়ে সরাসরি অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। যখন কেউ তাঁর খেলার রিদম খুঁজে পাচ্ছেনা বলেছিল, তখন তিনি বলেছিলেন, “হয়তো তুমি আমাকে পছন্দ করো না, বা খেলা বোঝো না।”
নূরুলের ক্যারিয়ার সংখ্যাগুলো তার দক্ষতার প্রমাণ দেয়। ব্যাটিং গড়ে ৫০ এর বেশি, স্ট্রাইক রেট প্রায় ১০০ এবং কঠিন মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলা তার বৈশিষ্ট্য।
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স তাকে আরও প্রমাণিত করেছে। এক ম্যাচে শূন্য রানে আউট হলেও পরের ম্যাচে ৯৭ রান ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে শতক করেছেন। এক সিজনে ১১ ইনিংসে ৫২২ রান সংগ্রহ করে গড় ৫৮ এবং স্ট্রাইক রেট ৯৩.৫৪ রাখা, দলের জন্য তার অবদান স্পষ্ট করে।
সেপ্টেম্বর ২০২৩-এ নিজের শেষ ওয়ানডে খেলার পর ইনজুরির কারণে জাতীয় দলে তাঁর জায়গা পাচ্ছেনা, যা ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও নূরুলের অসাধারণ খেলাধুলার রেকর্ড রয়েছে। টি২০ যুগে তাঁর সাত বলের দুর্দান্ত রানের গতি (স্ট্রাইক রেট ৪৫৭.১৪) ইতিহাসের চতুর্থ সেরা। এটি ছিল ফর্চুন বরিশালের বিপক্ষে একটি উত্তেজনাপূর্ণ শেষ ওভার রানের দৌড়।
টিম ফার্স্ট প্লেয়ার হিসেবে নূরুল সবসময় দলের স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক হিসেবে তিনি দলকে ধারাবাহিকভাবে সাফল্য এনে দিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে প্রথম বারের চ্যাম্পিয়নশিপ জয় এবং আট ম্যাচের অবিচ্ছিন্ন জয় রেকর্ড।
নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের সফরে দুই ফরম্যাটেই শতক করা নূরুল বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার টপ এন্ড টি২০ সিরিজে বাংলাদেশের ‘এ’ দলে নেতৃত্ব দেন।
জাতীয় দলে ফিরবেন কিনা তা এখনও অনিশ্চিত। ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের পরও নির্বাচকদের পছন্দে তিনি নেই, যা অনেকের কাছে রহস্য।
সম্ভবত তাঁর কথাই এই যাত্রার সার্থক সারাংশ: হয়তো তাঁরা তাঁকে পছন্দ করেন না, অথবা খেলাটাই বোঝেন না।