ডেইলি প্রতিদিনের বাণী রিপোর্ট
প্রকাশিত: ১৬ মে ২০২৫, ০৬:৪৬
নিজস্ব প্রতিবেদক
নূর মোহাম্মদ জীবিকার তাগিদে চার বছর আগে সৌদি আরবে যান। স্বপ্ন ছিল পরিবারের দারিদ্র্য ঘোচানোর। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙে যায় নির্মাণকাজ করার সময় চারতলা ভবন থেকে পড়ে মৃত্যুর মাধ্যমে।
গত ৯ মে একটি নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ মে তার মৃত্যু হয়।
নূরের ছোট ভাই আসিনুর জানান, তাদের পরিবারে ছয় ভাইয়ের মধ্যে নূর ছিলেন দ্বিতীয়। বিদেশে যাওয়ার আগে তিনি ঋণগ্রস্ত ছিলেন। পরিবারের ছয় সন্তানের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে তিনি সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন।
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার আকামার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। বৈধ কাগজ না থাকায় মালিকরা তাকে বদলি করে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করাত। এমন এক সময়েই দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি।
আসিনুর বলেন, “আমরা এখন বড় সমস্যায় আছি। ভাইয়ের মরদেহ বাংলাদেশে আনতে পারছি না। সরকারের কাছে অনুরোধ, যেন দ্রুত মরদেহটি দেশে ফেরত আনা হয়।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাদির শাহ জানিয়েছেন, মরদেহ ফেরত আনার কাজে প্রশাসন থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।
তিনি বলেন, প্রবাসে থাকা অবস্থায় যদি কোনো শ্রমিক মারা যান, তাহলে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে পরিবারকে তিন লক্ষ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়।
এই সহযোগিতা পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পূরণে পরিবারকে সব ধরনের সহায়তা করবে উপজেলা প্রশাসন। প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে তা ঢাকায় পাঠানো হবে বলেও তিনি জানান।
নূরের মৃত্যুর খবরে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবার এখন একটাই চায়, যেন তাদের প্রিয়জনের মরদেহ দেশে এনে জানাজা ও দাফন করা যায়।
এই ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিল প্রবাসী শ্রমিকদের অনিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং তাদের সুরক্ষায় রাষ্ট্রীয় ভূমিকা আরও জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা।