Saturday, October 25, 2025
Homeখেলাধুলানারী ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে বিতর্ক

নারী ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে বিতর্ক

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ঘোষণায় সমালোচনা, সারওয়াত সিরাজ সভাপতি ও ফিরোজা করিম সাধারণ সম্পাদক

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) শনিবার ফুটবল ও ক্রিকেট ছাড়া সব ক্রীড়া সংস্থার জন্য অ্যাডহক কমিটি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হয়েছে নারী ক্রীড়া সংস্থার কমিটি, যা দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে ছিল। নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকেই ক্রীড়া অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়েছে।

১৯ সদস্যের এই অ্যাডহক কমিটিতে সভাপতি হয়েছেন সারওয়াত সিরাজ (শুক্লা), যাকে সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে “জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও ক্রীড়া অনুরাগী” হিসেবে পরিচিত করা হয়েছে। তবে ক্রীড়া মহলের অনেকেই তার নাম আগে কখনও শোনেননি। গত ছয় বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা ফিরোজা করিম নেলি নতুন কমিটিতেও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে থেকে গেছেন।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গঠিত অনুসন্ধান কমিটি বিভিন্ন সংস্থার অ্যাডহক কমিটি গঠনে সুপারিশ করেছিল, যা পরে এনএসসি অনুমোদন দেয়। কিন্তু অনুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক জোবায়েদুর রহমান রানা জানান, নারী ক্রীড়া সংস্থার কমিটি তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী হয়নি।

তিনি বলেন, “আমরা যে তালিকা পাঠিয়েছিলাম, সেটি থেকে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদেও হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। আগের মতো রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত কিছু মানুষ থেকেই গেছে। এটি আমাদের সুপারিশের প্রতিফলন নয়।”

কমিটির আরেক সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর ইমরোজ আহমেদ বলেন, “আমরা ডিসেম্বরেই তালিকা জমা দিয়েছিলাম এবং মার্চে আলোচনা শেষে তা চূড়ান্ত হয়। কিন্তু সাত মাস পর যে তালিকা প্রকাশ হলো, তাতে অসংখ্য অসঙ্গতি দেখা যাচ্ছে। একই সমস্যা শ্যুটিং ফেডারেশনের ক্ষেত্রেও হয়েছে।”

রানা ও ইমরোজ উভয়েই জানান, অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নাম চূড়ান্ত তালিকায় বাদ পড়েছে। “আমরা শ্যুটিং ফেডারেশনে কমনওয়েলথ স্বর্ণপদকজয়ী আসিফ হোসেন খানকে অন্তর্ভুক্ত করেছিলাম, কিন্তু তার নাম নেই। তেমনি নারী ক্রীড়া সংস্থায় কামরুন নাহার দানা ও জোবেরা রহমান লিনুর মতো বিশিষ্টদের বাদ দেওয়া হয়েছে,” তারা বলেন।

প্রাক্তন জাতীয় ক্রীড়াবিদ ও সংগঠক কামরুন নাহার দানা বলেন, “নারী ক্রীড়াঙ্গনে অনেক যোগ্য ও অভিজ্ঞ নারী রয়েছেন, যারা নেতৃত্ব দিতে পারেন। কিন্তু ক্রীড়া-অভিজ্ঞতা নেই এমন একজন আইনজীবীকে সভাপতি করা অযৌক্তিক। রাজনীতি মুক্ত ক্রীড়া পরিবেশ গড়ার কথা বলা হলেও বাস্তবে সেটি হয়নি।”

১৯ সদস্যের কমিটিতে ফওজিয়া হুদা জুঁই, সাবুরা খাতুন, মারিয়ম তারেক ও সালামা খাতুনের মতো প্রাক্তন ক্রীড়াবিদদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে মৌসুমি আলম মৌ নামের এক সদস্যের অন্তর্ভুক্তি, যাকে “ক্রীড়া সাংবাদিক” হিসেবে পরিচয় দেওয়া হয়েছে, যদিও সাংবাদিক মহলে তার নাম অপরিচিত।

এই বিতর্কের মধ্যে ক্রীড়া মহলের অনেকে আহ্বান জানিয়েছেন—নারী ক্রীড়ায় স্বচ্ছতা, যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত প্রশাসন গঠনের।

RELATED NEWS

Latest News