নোয়াখালী জেলাজুড়ে টানা ভারী বর্ষণে নতুন করে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৪১ হাজার ৮৪০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে মোট ৪৬৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
শুক্রবার বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইস্তিয়াক আহমেদ বলেন, বর্ষার টানা ধারাবাহিকতায় পুরো জেলায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এ পর্যন্ত ২ লাখ ৩ হাজার ১০০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অন্তত ৪০টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে।
জলাবদ্ধতার কারণে জেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় পানি জমে আছে। বিশেষ করে মাইজদী শহরের ডেপুটি কমিশনার অফিস, মৎস্য অফিস, জেলখানা রোড এবং পৌর মার্কেট সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
অভ্যন্তরীণ পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা কার্যকর না থাকায় ঘরবাড়ি ও সড়কে পানি জমে থাকার সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে। এতে দিনমজুর, যানবাহনের চালক এবং সাধারণ মানুষকে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সদর উপজেলার আন্দারচর ইউনিয়নের বাসিন্দা দিলওয়ার হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বৃষ্টি না হলেও বাড়ির উঠান ও রাস্তা এখনো পানিতে ডুবে আছে। তিনি বলেন, “নিষ্কাশন ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ায় পানি সরে যেতে দেরি হচ্ছে। ফলে বৃষ্টিপাত কমলেও দুর্ভোগ কমেনি।”
জেলা প্রশাসক জানান, “আমরা নিষ্কাশন ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি এবং দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতির জন্য কাজ করছি।”
জেলার নিচু এলাকাগুলোতে এখনো সড়ক পানির নিচে রয়ে গেছে। দুর্বল অবকাঠামো ও অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে দুর্যোগকালীন সময়ে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্র ও ত্রাণ সহায়তা প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণকেও সচেতন হতে হবে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা। অব্যাহত বৃষ্টির ফলে পরিস্থিতি উন্নতির জন্য এখন কার্যকর উদ্যোগ ও সমন্বিত পরিকল্পনা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।