ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণের আর কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “২৬ মে শপথ নেওয়ার শেষ সময় ছিল। এর মধ্যে বিষয়টি বিচারাধীন থাকায় শপথ পড়ানো সম্ভব হয়নি। এরপর সিটি করপোরেশনের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে।”
উপদেষ্টা জানান, ইশরাকের শপথ পড়ানোর আগে আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে মতামত চাওয়া হয়। সেখান থেকে জানানো হয় যে বিচারাধীন বিষয় হওয়ায় প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়া শপথ পড়ানো যাবে না।
আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, “গেজেটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ১ জুন করপোরেশনের মেয়াদও শেষ হয়েছে। এখন আর শপথের সুযোগ নেই।”
তিনি বলেন, “১৪ মে থেকে নগর ভবনের সামনে ইশরাক সমর্থকদের অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এতে ডিএসসিসি কার্যত অচল হয়ে পড়ে। এক কোটিরও বেশি মানুষ যাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম এই করপোরেশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তারা সমস্যায় পড়েন।”
এই পরিস্থিতিকে তিনি ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা’ হিসেবে স্বীকার করেন এবং বলেন, “সিটি করপোরেশনে তালা দেওয়া মানে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, অফিসারদের কাজ করতে না দেওয়া বা মেয়রের চেয়ারে বসা— এসবই ফৌজদারি অপরাধের মধ্যে পড়ে।”
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে ইশরাক হোসেন পরাজিত হন। পরে ক্ষমতার পালাবদলের পর ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফলাফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে।
তবে শপথ গ্রহণ না হওয়ায় তিনি মেয়রের দায়িত্ব নিতে পারেননি। আন্দোলনের পরও সরকার তাকে শপথ পড়ায়নি। শেষমেশ ইশরাক নিজেই শপথ নেওয়ার ঘোষণা দেন।
ঈদের ছুটির পর নগর ভবনে কর্মচারীদের নিয়ে সভাও করেন তিনি, যেখানে তার নামের আগে ‘মাননীয় মেয়র’ লেখা ব্যানার ব্যবহার করা হয়।
উপদেষ্টা আসিফ বলেন, “ইশরাক গণআন্দোলনের অংশ ছিলেন। তাই আমরা কখনও তাকে ব্যক্তিগতভাবে লক্ষ্যবস্তু করিনি। তবে তার কাছ থেকে আরও দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করি।”
তিনি আরও বলেন, “বিএনপির সঙ্গে সরকারের ভালো বোঝাপড়া রয়েছে। তাই সব পক্ষকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।”