ঈদকে সামনে রেখে নতুন টাকা সংগ্রহের চাহিদা থাকলেও ব্যাংকগুলোতে তা মিলছে না। অথচ রাজধানীর গুলিস্থানের ফুটপাতে খোলামেলা বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকার নতুন নোট। অনেক দোকানদার এবং পথচারীর ব্যাগে দেখা গেছে নতুন টাকার বান্ডেল। এমনকি কিছু ব্যক্তি ক্যামেরার উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড়েও পালিয়ে যান।
একজন বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি জানান, টাকা ব্যাংকের একজন পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে পেয়েছেন। আরেকজন বলেন, তারা এ টাকা ব্যবসা করেই আনেন, এবং নিয়মিতভাবে ব্যাংকের নির্দিষ্ট শাখা থেকে সংগ্রহ করেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে রোববার সীমিত পরিসরে ২০, ৫০ এবং ১০০০ টাকার নতুন নোট বিতরণ শুরু হয়েছে। নির্দিষ্ট কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখাতেও সীমিত আকারে বিতরণ চলছে। তবে সাধারণ গ্রাহকরা অভিযোগ করছেন, ব্যাংকে গেলে নতুন টাকা পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে গুলিস্থানের ফুটপাত ঘুরে দেখা গেছে, ১০০০ টাকার একটি বান্ডেল কিনতে হলে অতিরিক্ত ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা গুনতে হচ্ছে গ্রাহককে। কেউ কেউ বলছেন, ১০০০ টাকার নতুন নোট ১৫৫০ টাকায়ও বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ প্রচলিত আইনে স্পষ্টভাবে বলা আছে, নতুন মুদ্রা বিনিময়ে গ্রাহককে কোনও অতিরিক্ত অর্থ দিতে হবে না।
স্থানীয় বিক্রেতারা স্বীকার করেন, ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা কমিশনের বিনিময়ে দালাল চক্রের হাতে নতুন টাকা তুলে দেন। পরে সেই টাকা কালোবাজারে আসে গুলিস্থানের ফুটপাতে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেউ মুখ খুলতে চাননি, বরং ক্যামেরা দেখে দৌড়ে পালিয়ে যান।
আরও পড়ুন:
- ঈদুল আজহার আগে বাজারে এলো বাংলাদেশের নতুন ডিজাইনের টাকা
- ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোটে থাকছে ইতিহাস, আন্দোলন ও শহীদদের প্রতীক
এমন প্রশ্ন উঠছে, যখন বাংলাদেশ ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও বাজারে নতুন টাকা ছাড়েনি, তখন কীভাবে ফুটপাতে একাধিক ব্যক্তির কাছে পাওয়া যাচ্ছে এ টাকা? কারা জড়িত এ সিন্ডিকেটে?
গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে স্পষ্ট, সাধারণ জনগণের অধিকার হরণ করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র ঈদের আগে নতুন টাকার বাণিজ্যে মেতে উঠেছে। এমন অবস্থায় প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও তদন্ত দাবি করছেন সচেতন মহল।
নতুন টাকা বিতরণকে কেন্দ্র করে এবার যেভাবে গোপন সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়েছে, তা রোধে অবিলম্বে প্রমাণ-ভিত্তিক পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।