ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজায় হামাসকে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত করা এবং সব জিম্মিকে মুক্ত করাই এখন তার সরকারের প্রধান লক্ষ্য। মঙ্গলবার সেনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শনকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
নেতানিয়াহু বলেন, “শত্রুকে পরাজিত করা, জিম্মিদের মুক্ত করা এবং গাজাকে আর ইসরায়েলের জন্য হুমকি না রাখাই জরুরি।” তিনি জানান, নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা শিগগিরই নতুন যুদ্ধ পরিকল্পনা অনুমোদন করবে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, নেতানিয়াহু পুরো গাজা দখলের পরিকল্পনা বিবেচনা করছেন। সরকারি সম্প্রচারক ‘কান’ জানায়, তিনি সেনাবাহিনীকে গাজা উপত্যকার পুরো অঞ্চল দখল করার নির্দেশ দিতে পারেন। তবে কিছু সংবাদমাধ্যম ধারণা করছে, এটি হয়তো কেবলই আলোচনায় চাপ তৈরির কৌশল।
হামাস জানিয়েছে, গাজা দখলের পরিকল্পনা হলেও তাদের অবস্থান পরিবর্তন হবে না। সংগঠনটি জানায়, যুদ্ধবিরতি ও সেনা প্রত্যাহার ছাড়া কোনো সমাধান সম্ভব নয়।
২২ মাস ধরে চলা এই যুদ্ধে গাজার অধিকাংশ অঞ্চল ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধের শুরু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে অন্তত ৬১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অপরদিকে, ওই হামলায় ১ হাজার ২১৯ ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২৫১ জন জিম্মি হন। বর্তমানে ৪৯ জন জিম্মি এখনো গাজায় রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি সেনারা।
মানবিক সংস্থাগুলো বলছে, গাজার ২৪ লাখ মানুষ মারাত্মক খাদ্য সংকটে ভুগছে। আন্তর্জাতিক চাপ বাড়লেও নেতানিয়াহুর জোটসঙ্গীরা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া ও গাজা পুনর্দখলের দাবি জানাচ্ছেন।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদকরা গাজার মানবিক সহায়তা বণ্টন নিয়ে নতুন সমালোচনা করেছেন। অপরদিকে, ইসরায়েলি প্রশাসন সীমিতভাবে বেসরকারি বাণিজ্য চালু করার ঘোষণা দিয়েছে, যাতে গাজার খাদ্য সংকট কিছুটা লাঘব হয়।
নেতানিয়াহু সোমবার পুনর্ব্যক্ত করেন, “আমাদের যুদ্ধের লক্ষ্য অপরিবর্তিত – শত্রুর পরাজয়, জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজা যেন আর কখনো ইসরায়েলের জন্য হুমকি না হয়।”